ভাদ্রের তালপাকা গরমে বেশ কদিন থেকে প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল আমনের ক্ষেতগুলো পানির জন্য হাহাকার করছিল। আমন ধান রক্ষা করতে কৃষকরা জমিতে ভূগর্ভ থেকে পানি উত্তোলন করে সেচ দিচ্ছেন ফসল রক্ষার চেষ্টা করছিলেন। এতে একর প্রতি সেচ দিতে তাদের খরচ হচ্ছে ৩ হাজার টাকার ওপর। এ অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল থেকে প্রকৃতি সদয় হয়ে আকাশভাঙা জলধারায় ভাসাচ্ছে সবুজ প্রান্তরকে। ফলে কৃষকদের মাঝে কিছুটা স্বস্তি এসেছে। রংপুর অঞ্চলে চলতি মৌসুমে ৬ লাখ হেক্টরের বেশি জমিতে আমনের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
রংপুর কাউনিয়া উপজেলার আমন চাষি আফজাল হোসেন, পীরগাছার বুলবুল মিয়া, নগরীর গৌরাঙ্গ মহন্তসহ বেশ কয়েকজন চাষি জানান, বৃষ্টির জন্য বেশ কয়েকদিন থেকে আকাশের পানে চেয়েছিলাম। অবশেষে মঙ্গলবার সকাল থেকে কিছুটা বৃষ্টির দেখা পাওয়ায় স্বস্তি এসেছে। তারা জানান, কদিন আগেও জমিতে প্রতি ঘণ্টা ১২০ টাকা করে ১৬ ঘণ্টা জমিতে সেচ দিয়ে চারা রোপণ করে ক্ষেত পরিচর্যা করছেন। এতে বাড়তি খরচ পড়েছে ১ হাজার ৯৫০ টাকা। বৃষ্টি না হলে আরও ১৬ থেকে ২০ ঘণ্টা সেচ দিতে হত। তবে বৃষ্টি হওয়ায় আপাতত সেচের বাড়তি খরচের চিন্তা থেকে কিছুটা মুক্ত হওয়া গেছে। সদর উপজেলার আমন চাষি অমিনুর রহমান ২ একর জমিতে আমন আবাদ করেছেন বৃষ্টির অভাবে সেচ দিয়ে আমনের চারা রোপণ করেছেন। বৃষ্টি হওয়ায় তারা কিছুটা স্বস্তিতে। তাদের মত রংপুর অঞ্চলের কয়েক লাখ আমন চাষিরা মাঝে স্বস্তির ভাব এসছে। খরা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে সেচ বাবদ এই বিভাগে আমন চাষিদের এবারো বাড়তি খরচ পড়বে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় প্রায় ৬ লাখ ১২ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ অঞ্চলের কৃষক এখনো প্রকৃতির ওপর নির্ভর করছে। রংপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানাগেছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে বেলা ৩ টা পর্যন্ত রংপুরের ৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল