ঢাকা, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

গণপিটুনির পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণপিটুনির শিকার হওয়া সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ মারা গেছেন। শনিবার রাত পৌনে ১২ টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে শনিবার বিকালে নগরীর বিনোদপুর বাজার এলাকায় মারধরের শিকার হন মাসুদ।

নিহত আব্দুল আল মাসুদ  রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিকেল সেন্টারে স্টোর অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায়। মাসুদের বাবার নাম রফিকুল ইসলাম।

নিহত মাসুদ গত ৩ সেপ্টেম্বর একটি কন্যা সন্তানের বাবা হয়েছিলেন। সপরিবারে চাকরির সুবাদে তারা বিনোদপুরে থাকতেন বলে জানা গেছে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ পারভেজ বলেন, আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে বিনোদপুরে মারধর করা হয়েছিল। এরপর একদল শিক্ষার্থী তাকে প্রথমে মতিহার, পরে বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে যান। গুরুতর আহত দেখে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়।

ওসি বলেন, নিহতের লাশ রামেক হাসপাতালে মর্গে আছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। 

এদিকে একইদিন শনিবার বিকালে সানি ও কটা নামের দুই ব্যক্তি গণপিটুনির শিকার হয় ছাত্র জনতার হাতে। সানি ও কটার বিরুদ্ধে গত ৫ আগস্ট আন্দোলন চলাকালে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে পেটানো হয়। পরে তাদের নগরীর বোয়ালিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তারা নগরীর পঞ্চবটি এলাকার বাসিন্দা। মারধর শেষে তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিকালে নগরীর পঞ্চবটি পদ্মাপাড়ে এই ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, শনিবার বিকালে রাজশাহী রেল স্টেশন এলাকায় ছাত্র-জনতার হাতে ধরা পড়ে সানি। এ সময় গত ৫ আগস্ট এক ছাত্রীকে ধর্ষণের বিষয়টি সামনে আসে। এতে সানি স্বীকার করে আরও ছয় থেকে সাতজনের নাম বলেন। তাদের মধ্যে রয়েছে কটা। এ সময় সানিকে ধরে কটার সন্ধানে পঞ্চবটির নদীপাড়ে আসে শিক্ষার্থীরা। কটা বিষয়টি টের পেয়ে পদ্মা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে চরে গিয়ে উঠে। পরে ছাত্র-জনতার হাতে গণ ধোলায়ের শিকার হন কটা। কটাকে মারধরের কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে  ছড়িয়ে পড়েছে।

ঘটনাস্থলে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, আমরা একটা মিটিংয়ে ছিলাম। হঠাৎ খবর এলো একজন ধর্ষক ধরা পড়েছে। এতোদিন আমাদের কানে আসছিল গত ৫ আগস্ট একটা ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তবে তার পরিবারের পক্ষ থেকে সম্মানের ভয়ে কোনো মামলা হয়নি। আটক সানি ধর্ষণের কথা স্বীকার করে আরও ছয় থেকে সাতজনের নাম বলে। পরবর্তীতে তার তথ্যের ভিত্তিতে নদীপাড়ে কটাকে ধরতে যায় তারা। এ সময় কটা নদীতে ঝাঁপিয়ে সাঁতার দিয়ে মাঝ নদীতে চলে যায়। পরে তাকে ধরে নিয়ে গণধোলায় দেয় জনতা।

এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ পারভেজ বলেন, ছাত্র-জনতা তাদের থানায় সোপর্দ করেছে। তারা আহত ছিল। তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল



এই পাতার আরো খবর