রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় তিস্তা নদীর পানি কমার সাথে সাথে দেখা দিয়েছে ভাঙন আতঙ্ক। নদী ভাঙনের কবলে পড়ে কাউনিয়ার মানচিত্র থেকে শুভাঘাট ও শ্বনশনাটারী মৌজা দুটি বিলীন হয়ে গেছে অনেক আগেই। গত কয়েক দিনে ১০ পরিবারের বসতভিটা নদী গর্ভে চলে গেছে।
জানা গেছে, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি ইউনিয়নই নদী ভাঙনের শিকার। কাউনিয়ায় গত শুক্রবার রাত থেকে ভারতের ছেড়ে দেওয়া পানি আর বৃষ্টির পানিতে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা কবলিত হয় নদী তীরবর্তী ১০টি গ্রাম। গত রবিবার রাত থেকে পানি কমতে শুরু করলেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে চরগনাই গ্রামের ১০টি বসতভিটা নদীগর্ভে চলে গেছে, আরও ১২টি বসতভিটা নদীগর্ভে যাওয়ার পথে। এভাবেই প্রতিবছর ফসলি জমি আর বাড়ি-ঘর তিস্তা নদী গিলে খাচ্ছে।
চরগনাই গ্রামের নজরুল ইসলাম জানান, নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে তারসহ ১০টি বাড়ি নদী গর্ভে চলে গেছে। এ অবস্থায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তিস্তা নদী পাড়ের বাসিন্দারা।
গদাই গ্রামের আবুল হোসেন জানান, নদীর পানি কমার সাথে সাথে বাড়বে নদী ভাঙন, এবারও হয়তো ফসলি জমি নদীর পেটে চলে যাবে, এ নিয়ে চিন্তায় আছি। হঠাৎ বন্যায় নদী তীরবর্তী এলাকার উঠতি ধান, বীজ বাদাম, মরিচসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েন। ডুবে যায় কৃষকের ফসল, ভেসে যায় পুকুরের মাছ।
টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম জানান, তার এলাকায় ১০টি বাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। যে হারে ভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে করে আরও শতাধিক বসতভিটা নদী গর্ভে চলে যেতে পারে। তিস্তা নদী ড্রেজিং করা না হলে এই ভাঙন কোনোভাবেই ঠেকান যাবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, তিস্তা নদী এলাকায় বন্যা ও ভাঙনের বিষয়ে আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখছি। কোথাও কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানির প্রবাহ ছিল ২৮ দশমিক ৯১ সেন্টিমিটার। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার।
বিডি প্রতিদিন/এমআই