জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ‘গুণী শিক্ষক’ সম্মাননা পেলেন সুলতানা রাজিয়া। তিনি রাজধানীর বাড্ডায় হাজী মাদবর আলী হাচানিয়া দাখিল মাদরাসার ইংরেজি বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক।
শনিবার (৫ অক্টোবর) বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নির্বাচিত শিক্ষকদের মাঝে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদুজ্জামান মাহমুদ মনোনীত শিক্ষকদের হাতে এই সম্মাননা ও ক্রেস্ট তুলে দেন।
সম্মাননা পেয়ে অনুষ্ঠানে সুলতানা রাজিয়া বলেন, একজন শিক্ষক হিসেবে এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে আমি অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত। শিক্ষকের সামাজিক মর্যাদা,আর্থিক স্বচ্ছলতা নিশ্চিত করতে পারলে শিক্ষায় ইতিবাচক বিপ্লব সূচিত হবে। আজকের অভূতপূর্ব এ আয়োজন তারই দৃষ্টান্ত। এমন স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কারিগরদেরকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এমন উদ্যোগ শিক্ষকগণকে উজ্জীবিত,অনুপ্রাণিত করবে।
তিনি আরও বলেন, অসংখ্য গুণী শিক্ষকদের সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে সত্যিই সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে। আজকের অর্জিত স্বীকৃতির পিছনে মা-বাবা,শিক্ষকমণ্ডলী, সহকর্মীবৃন্ধ, অভিভাবকবৃন্দ, প্রিয় শিক্ষার্থী, মাদরাসা প্রধান, সহকর্মীবৃন্দ, বিএমটিটিআই কর্তৃপক্ষসহ সকল শুভাকাঙ্ক্ষীর পরামর্শ, সহযোগিতার জন্য রইলো অতল শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা। এ সময় শিক্ষকদের আর্থিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো এবং মাদ্রাসা শিক্ষায় সংস্কারের দাবি জানান সুলতানা রাজিয়া।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদুজ্জামান মাহমুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডাঃ বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান ড. এস এম এ ফায়েজ, ইউনেস্কো ঢাকা অফিসের প্রধান ড. সুসান ভাইস প্রমুখ। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ।
এ বছর সুলতানা রাজিয়া ছাড়াও কিশোরগঞ্জের বাশগাড়ী ১ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রায়হানা হক, সিলেটের জান্নাতুল উম্মাহ বালিকা দাখিল মাদ্রাসার মো: আতিকুর রহমান, বরিশাল ব্রজমোহন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: মোমিন হাওলাদার, নারায়ণগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মোঃ মাহবুব হায়দার, রাজশাহী সরকারি কলেজের অধ্যাপক ড. আবু সাইদ মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, ঢাকার মোহাম্মদাবাদ ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম রফিক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. এ এ মামুন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফজলে রাব্বি চৌধুরী, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সোহেল রহমান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আহসানুল কবীর গুণী শিক্ষক হিসেবে সম্মাননা পান।
সুলতানা রাজিয়া এর আগে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে (২০২৪) বাড্ডা থানা পর্যায়ে দুই বার এবং মহানগর পর্যায়ে আরও দুই বার শ্রেষ্ঠ শ্রেণী শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন। তবে এবারই প্রথম গুণী শিক্ষক নির্বাচিত হয়ে সম্মাননা পেলেন তিনি।
সুলতানা রাজিয়া ১৯৮২ সালে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানার পাড়াগাঁও গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আবুল কাশেম ও মাতা মাহমুদা খাতুনের ৯ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় সুলতানা রাজিয়া। তার ৯ ভাই-বোনের মধ্যে ৫ জনই নিয়োজিত আছেন শিক্ষকতা পেশায়।
বিডি প্রতিদিন/আশিক