ঝিনাইদহে বাজারে বর্ষাকালীন সময়ে মাছ, মাংস পর্যাপ্ত থাকলেও দাম চড়া। কিছুতেই কমছে না সবজি, মাছ ও মাংসের দাম। সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় কিনতে হিমসিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। মাছ, মাংস খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে স্বপ্নের মতো, সেখানে নিম্ন আয়ের মানুষ দুমুটো ডাল ভাত খেয়ে জীবনযাপন করতে নাভিশ্বাস হয়ে উঠছে। মাছ ও মাংসের পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম দিন গেলেই বেড়ে যাচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। মানুষ বাজারে গিয়ে বাকরুদ্ধ হচ্ছে পণ্যর দাম শুনে। ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলার সকল বাজারে প্রায় সব পণ্যের দাম ঊর্দ্ধমুখী।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টির অজুহাতে আবারও বেড়েছে সকল পন্যের দাম। সপ্তাহের ব্যবধান কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে মুরগির বাজারে। মুরগির দাম কেজিপ্রতি কমেছে ১০/১৫ টাকা। ব্রয়লার মুরগি ১৮৫/১৯০ টাকা,লিয়ার মুরগি ৩০০/৩২০ টাকা, সোনালি ২৪০/২৫০ টাকা ও দেশি মুরগি ৪৫০/৪৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ৭০০ টাকা, ছাগলের মাংস ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে দেশী প্রজাতির মাছের বাজারে কেজিতে ৩০/৫০ টাকা দাম বেড়েছে। রুই বড়গুলো ৫০০/৫২০ টাকা কেজি, ছোট রুই ৩২০ টাকা কেজি, গ্রাসকার্প ৩০০টাকা,পাবদা ৪০০/৪২০ টাকা,পাঙ্গাস মাছ ২০০/২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২৬০/২৮০ টাকা, ভাটা ছোট সাইজ ২৪০/২৬০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৮০০/৯০০ টাকা, ইলিশ বড়গুলো ১৮০০ টাকা, মিডিয়াম সাইজের ইলিশ ১৪০০ টাকা, ছোট ইলিশ ৯০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পিয়াজ ১০০/১১০ টাকা, রসুন-২০০/২২০ টাকা, কাঁচা ঝাল ৩০০/৩২০ টাকা, শুকনা ঝাল ৪০০ টাকা, প্রতি কেজি গোল বেগুন ১০০ টাকা, লম্বা বেগুন ৯০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৬০, বরবটি ৪০/৫০,পালনশাক ১৫ টাকা আঁটি, পুঁইশাক ২৫ টাকা আঁটি, শাকের ডাটা ২৫টাকা আঁটি, ঘেটকোল ১৫ টাকা আঁটি, লাল ও সাদা শাক ১৫ টাকা আঁটি, কচুর মুখি ৭০/৮০টাকা, ফুলকপি ৮০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০/৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা কেজি, চাল কুমড়ার জালি ৪০টাকা পিস, শসা ৫০/৬০ টাকা, মিঠেপুল্লা ৪০ টাকা, পুঁইশাকের মেচড়ি ১০০ টাকা কেজি, কাকরোল ৮০ টাকা কেজি, গাজর ১৮০ টাকা কেজি, টমেটো ১৪০ টাকা কেজি, উচতে ৯০/১০০ টাকা কেজি, ওল ৭০ টাকা কেজি, জলপাই ৭০ টাকা কেজি, উসি ৫০ টাকা কেজি, ঝিংগা ৬০ টাকা কেজি, কাগজি লেবু ১৫ টাকা হালি, মুলা ৬০, কচুর লতি ৬০/৮০, পটোল ৫৫/৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, আলু ৫৫/৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, বাজারে গেলে বোঝা যায় দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি কেমন মাত্রা যোগ হয়েছে। ১ হাজার টাকার নোটে ৩/৪ আইটেম পণ্য নিলে ফুরিয়ে যায়। মানুষের জীবনযাপনে খুবই কষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে যারা দিনমজুর নিম্ন আয়ের মানুষ তারা অনেক কষ্টে জীবন যাপন করতে হচ্ছে। সিন্ডিকেটের কারণে মূল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে। জবাবদিহিতা করার কেউ নেই। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন চোখে পড়ার মতো মনিটারিং করা হচ্ছে না।
এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টির ও খরার কারণে ফসল, মাছ ও মুরগির খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বাজারে কমে গেছে পণ্যের সরবরাহ। ফলে দাম কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী।
তাদের মতে, লাগাতার বৈরী আবহাওয়ার কারলে সবজির দাম বেড়েছে। মূলত অতিবৃষ্টি প্রভাব পড়েছে সবজির বাজারে।
মাছের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টির ফলে বেশকিছু অঞ্চলে চাষিদের মাছ ভেসে গেছে। ফলে বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় মাছের দাম কিছুটা বেড়ে গেছে।
এব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল জানান,ইতোমধ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ২০টি বাজারে মনিটরিং করেছেন। এটি অব্যাহত থাকবে। সেই খোজখবর নেওয়া হচ্ছে। অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ