ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

বরিশালে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা, ঈদে পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

গত ১৬ জুলাই থেকে শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ডেঙ্গু আক্রান্ত ২১৮ জন রোগী। সব শেষ গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৩৭ জন রোগী। কিন্তু ভর্তি হওয়া রোগীদের রোগ পরীক্ষা কিংবা তাদের প্রয়োজনীয় ওষুধের (গ্লুকোজ স্যালাইন) ব্যবস্থা করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।

পৃথক ওয়ার্ড চালুর সরকারি নির্দেশনা থাকলেও তা শুধু প্রতিশ্রুতিতেই সীমাবদ্ধ। এ কারণে প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল ভর্তি হওয়া রোগীরা। 

অতিরিক্ত ফি দিয়ে বাইরের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ডেঙ্গু পরীক্ষাসহ গ্লুকোজ স্যালাইন এবং অন্যান্য ওষুধও কিনতে হচ্ছে বাইরের ফার্মেসি থেকে। 

অথচ আসন্ন ঈদে পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যেতে পারে আশঙ্কায় তাদের চিকিৎসায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন শেরে-ই বাংলা মেডিকেলের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন।  

শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি ২১৮ ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ৯৩জন পুরুষ, ৩৯জন নারী এবং শিশু ৯জন।

ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে ৭৫ জন বাড়ি ফিরে গেছেন। মারা গেছে ২জন। 

শনিবার দুপুর পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিলেন ১৪১ জন। এছাড়া গৌরনদীতেও এক ডেঙ্গু আক্রান্ত নারীর মৃত্যু হয়েছে। 

গত কয়েক দিন ধরে ডেঙ্গু রোগীদের অভাব-অভিযোগের কোনও সমাধান হয়নি হাসপাতালে। ডেঙ্গু ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লেও এই রোগ পরীক্ষার এন্টিজেন ডিভাইস-ই এখন পর্যন্ত সংগ্রহ করতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এন্টিজেন পাওয়া যাচ্ছে না বলে দায় এড়াচ্ছে তারা। 

ডেঙ্গু রোগীদের অনবরত গ্লুকোজ স্যালাইন অপরিহার্য। কিন্তু রোগীদের তা দিতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিনামূল্যে শুধুমাত্র প্যারাসিট্যামল, গ্যাস্ট্রিকের ওমেপ্রাজল এবং হাতে তৈরি খাবার স্যালাইন দিচ্ছেন তারা। তাই রোগীদের ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে হচ্ছে বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে অতিরিক্ত টাকায়। এছাড়া রোগীদের অন্যান্য ওষুধও কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে। 

হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা হচ্ছে মেডিসিন ওয়ার্ডে। শয্যা না থাকায় মেঝে (ফ্লোর) ছাড়িয়ে এখন তাদের জায়গা হচ্ছে বারান্দায়। হাসপাতালে ডাক্তার-নার্সদের তৎপরতা থাকলেও ওয়ার্ডের নোংরা-দুর্গন্ধময় টয়লেট-বাথরুম নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই রোগীদের। 

হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য পৃথক ওয়ার্ড চালুর সরকারি নির্দেশনা থাকলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। তাই রোগীরা গাদাগাদি করে অবস্থান করছেন ওয়ার্ডে এবং বারান্দায়। 

ডেঙ্গুর প্রাথমিক পরীক্ষার এন্টিজেন ডিভাইস শুধু বরিশালেই নয়, সারদেশেই নেই বলে দায়িত্ব শেষ শেবাচিম হাসপাতাল পরিচালকের। গ্লুকোজ স্যালাইন সরবরাহ এসেছে বলে দাবি তার। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য চলতি সপ্তাহেই একটি পৃথক ওয়ার্ড চালুর কথা বলেন ডা. বাকির হোসেন। 

বিডি প্রতিদিন/কালাম



এই পাতার আরো খবর