ঢাকা, রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামে ডেঙ্গুর প্রভাব কমছে না, নির্মূল কার্যক্রম কাগজে কলমে
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা কমছে না। অন্য সময়ের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গুর প্রভাব আগেই শুরু হয়ে গেছে। ডেঙ্গুর প্রভাব শুরু হলেও চসিকের মশক নিধন কার্যক্রমের নেই কোনো গতি। যদিও সংস্থাটি নানা কার্যক্রম নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। অতীতে দেখা গেছে, জুলাই মাসে ডেঙ্গুর প্রভাব বেড়ে অক্টোবর নভেম্বরে তা কমতে থাকে। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেবা সংস্থাগুলোর গাফিলতির কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি। এছাড়াও ডেঙ্গু আক্রান্ত আর মৃত্যুর দিকে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ২২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। তার মধ্যে ৯ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশু রয়েছে ১১ জন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা আবুল হাশেম বলেন, আমরা একটি ওয়ার্ডকে চারটি ভাগে ভাগ করছি। প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডেও মশার পর্যাপ্ত ওষুধ পাঠানো হয়েছে। যে সব এলাকায় মশার ওষুধ ছিটানো হয়নি বলা হচ্ছে, তা তো হওয়ার কথা নয়। হয় তো এক পাশে ছিটিয়ে আরেক পাশে আসতে সময় লাগছে। তবে সব জায়গায় ওষুধ ছিটানো হচ্ছে।

জনস্বাস্থ্য অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ডা. সুশান্ত বড়ুয়া বলেন, অতীতের প্রবণতা হচ্ছে জুলাই থেকে ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়ে নভেম্বর-ডিসেম্বরে গিয়ে সেটা কমেছে। অক্টোবর-নভেম্বরে সর্বোচ্চ ডেঙ্গু শনাক্ত হচ্ছে। সুতরাং এই সময়টাকে ডেঙ্গুর পিক সময় বলা যায়। এবারও সেদিকে যাচ্ছে, কারণ এখন ডেঙ্গু পরিস্থিতি উঠতির দিকে রয়েছে। পরিস্থিতি কেমন হবে সেটা বলা যাচ্ছে না। তবে সবাইকে সচেতন হতে হবে। দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোকে তদারকি বাড়াতে হবে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে থাকতে হবে।

নগরের বাদুরতলা এলাকার বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মশার প্রজননের হটস্পট ঘোষণা দিয়েছিল ৫টি ওয়ার্ডে। মশক নিধনে ক্রাশ পোগ্রামের কথাও বরেছে। কিন্তু এখনো মশক নিধনের ওষুধ ছিটানো দেখিনি। সিটি করপোরেশন শুধু পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে সতর্ক করলেও মশক নিধন কার্যক্রম চোখে পড়ছে না। অথচ লোক দেখানো ড্রোন ওড়ানো আর জরিমানা করে নিজেদের দায় সেরে নিচ্ছে। ফলে মশক নিধন কার্যক্রম শুধু বিজ্ঞপ্তি প্রচার আর জরিমানায় সীমাবদ্ধ কি না এমন প্রশ্ন করছেন নগরবাসী।

শনিবার চট্টগ্রামে নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ১৪৩ জন। তার মধ্যে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন একজন শিশু। মৃত্যু হওয়া শিশুটির নাম মিশকাত (১৪)। সে বোয়ালখালী উপজেলার বাসিন্দা। গত ২০ জুলাই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিল। এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২২ জন। তারমধ্যে ১১জনই শিশু। এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ১৯শ ২৩ জন। তারমধ্যে শিশু রয়েছে ৪শ ৩২ জন।

চসিক নগরের ৪১টি ওয়ার্ডের সবচেয়ে বেশি মশার প্রজনন স্পট রয়েছে মোহরা ওয়ার্ডে, এ ওয়ার্ডে ৫২টি স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়াও শুলকবহর ওয়ার্ডে ৩০ স্পট, পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডে ২৯টি ও দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে ২৫ স্পটকে ঝুকিঁপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০২০ সালে চট্টগ্রামে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল মাত্র ১৭ জন, এরপর ২১ সালে তা বেড়ে ২৭১ জন। পরের বছর ২০২২ সালে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৪৪৫ জন শনাক্ত হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল



এই পাতার আরো খবর