ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

পটুয়াখালীতে একদিনে হাসপাতালে ভর্তি রেকর্ড ডেঙ্গু রোগী
পটুয়াখালী প্রতিনিধি

পটুয়াখালীতে ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তির রেকর্ড হয়েছে। কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এ পরিস্থিতি। গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়ে পরার কারণে সংশ্লিষ্টরা অনেকটায় অসহায় আত্মসমর্পন করছেন ডেঙ্গুর কাছে। প্রতিদিন আক্রান্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৮০ থেকে ১০০ এর মধ্যে ওঠানামা করছে। ইতোমধ্যেই চলতি সপ্তাহে ৪ জন মারাও গেছেন। তারা হলেন, মোঃ আজিজ (৬০), মির্জাগঞ্জের কাঠালতলীর লাল বরু (৬০), পটুয়াখালী শহরের কাঠপট্টি এলকার হাবিবা (২৮) এবং আমতলীর অঞ্জলি রানী (৫০)। যা চলতি মৌসুমে প্রথম ৪টি মৃত্যুর ঘটনা।

পটুয়াখালী সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য অনুযায়ী জেলায় ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৪ হাজার ২৯ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। যার মধ্যে ৩ হাজার ৭’শ ৬৯ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বর্তমানে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৬০ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৮ জন রোগী পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা কমপ্লেক্সগুলিতে ভর্তি হয়েছেন। যা পটুয়াখালী জেলায় সব সময়ের রেকর্ড গড়েছে। এর আগে প্রতিদিন ৭০ থেকে ১০০ জন পর্যন্ত রোগী ওঠা নামা করেছে। এত সংখ্যক রোগী সামলাতে চিকিৎসকরাও দিন রাত এক করে কাজ করছেন। কিন্তু তার পরেও কোন কিছুতেই যেন পরিস্থিতি সামলানো যাচ্ছে না। 

ডেঙ্গুর চোখ রাঙানিতে পটুয়াখালী স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্টরা এখন সতর্ক থাকতে মাইকিং, লিফলেট বিতরণের করেছেন। বর্তমানে শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলেই ডেঙ্গু বেশি ছড়িয়ে পড়েছে। 

পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন অফিসের মঙ্গলবার দেয়া তথ্য অনুযায়ি পটুয়াখালীতে নতুন করে ২৬০ জন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১১১ জন, মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৭ জন, গলাচিপায় ৩৩ জন, দশমিনা ৩১ জন, বাউফলে ২৯ জন, দুমকিতে ১২ জন ও কলাপাড়ায় ৭ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। আক্রান্তরা সবাই পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন উপজেলার গ্রামের মানুষ। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ডেঙ্গু রোগীদের ভিড়ে সাধারণ চিকিৎসা বন্ধ প্রায়। শয্যার চেয়ে রোগী বেশি হওয়ায় তাদের হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দার ফ্লোরে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ডেঙ্গু রোগীর কারণে সাধরণ রোগীদের চিকিৎসা মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। রোগীরা অভিযোগ করেন, প্রতিদিন সকালে একবার চিকিৎসক আসেন। বাকি সারা দিনে আর কোন ডাক্তার থাকে না। শুধু মাত্র ইন্টার্নি ডাক্তারা মাঝে মাঝে আসে।

পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন এস.এম কবির হাসান জানান, ডেঙ্গুর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পটুয়াখালী স্বাস্থ্য বিভাগ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। গত বছর এমন সময় ডেঙ্গু প্রাকৃতিক ভাবেই নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এ বছর সময় বেশি নিচ্ছে। বর্ষার কারণে এটি হচ্ছে ধারনা করা হচ্ছে। হয়তো চলতি মাসের শেষের দিকে অথবা আগামী অক্টোবর মাসের দিকে ডেঙ্গুর সংক্রমণ কমে আসতে পারে। সে পর্যন্ত ডেঙ্গুর আক্রমণ থেকে বাঁচতে স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা মেনে চলার পরামর্শ দিলেন এ কর্মকর্তা।

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর