ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

রয়টার্সের প্রতিবেদন
বাংলাদেশে শিল্প কেন্দ্র গড়ার প্রস্তাব জাপানের, ‘উদ্দেশ্য’ ভারতের বাজার
অনলাইন ডেস্ক

ভারতীয় বাজারের কথা মাথায় রেখে বাংলাদেশে একটি শিল্প কেন্দ্র (ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাব) গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছে জাপান। যেখানে বন্দর ও পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে ভারতের স্থলবেষ্টিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোসহ নেপাল ও ভুটানে পণ্য সরবরাহের ‘সাপ্লাই চেইন’ তৈরি করা যাবে।  এ উপলক্ষে মোটা অঙ্কের অর্থ বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী টোকিও।

ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার ভারত সফরের পর এই প্রস্তাব এসেছে। সেখানে তিনি বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চল এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল নিয়ে নতুন একটি শিল্প কেন্দ্র গড়ার ভাবনার কথা প্রকাশ করেন। যা ৩০ কোটি মানুষের এ অঞ্চলের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। 

কিশিদার ওই সফরের পরই জাপান সরকার বাংলাদেশে তিনটি অবকাঠামো প্রকল্পে ১২৭ কোটি ডলার বিনিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দরও রয়েছে। যেখান থেকে ত্রিপুরাসহ ভারতের স্থলবেষ্টিত রাজ্যগুলো এবং আরও বড় আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য পরিবহন করা সম্ভব হবে। 

ভারতে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোশি সুজুকি গত মঙ্গলবার ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় ভারতীয়, বাংলাদেশি এবং জাপানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে শিল্প কেন্দ্র গড়ে তোলার ওই প্রস্তাবের বিষয়ে বলেন, ‘এটা ভারত ও বাংলাদেশ সবার জন্যই লাভজনক হতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাতারবাড়ির গভীর সমুদ্রবন্দরটি ২০২৭ সাল নাগাদ চালু হতে পারে। আর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে যুক্ত করে একটি শিল্প কেন্দ্র গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এ বন্দর মূল ভূমিকা রাখতে পারে।’  

ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিশান রেড্ডি বৈঠকে জাপানের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, ‘এ পরিকল্পনা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে এবং জাপান ও অন্যান্য দেশের বিনিয়োগ আনতে সহায়ক হতে পারে।’

নির্মাণাধীন মাতারবাড়ি বন্দর হবে বাংলাদেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর, যেখানে বড় আকারের জাহাজ ভিড়তে পারবে।

ওই সমুদ্রবন্দর থেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের দূরত্ব একশ’ কিলোমিটারের কাছাকাছি। ফলে এ বন্দর আঞ্চলিক রফতানিকারকদের জন্য একটি প্রবেশদ্বার হয়ে উঠতে পারে বলে মন্তব্য করেন দুই দিনের এ বৈঠকের আয়োজক, গবেষণা সংস্থা এশিয়ান কনফ্লুয়েন্সের প্রধান সব্যসাচী দত্ত।

এ অঞ্চলে চীনের প্রভাব বিস্তার ঠেকাতে এবং বেইজিংয়ের মাল্টি বিলিয়ন ডলারের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আফ্রিকাজুড়ে যৌথভাবে বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্প গড়ে তুলছে ভারত ও জাপান।

রাষ্ট্রদূত সুজুকি বলেন, ‘ইতোমধ্যে তিনশ’র বেশি জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশে কাজ করছে। দুই দেশ শিগগিরই একটি অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করবে বলে আশা করা হচ্ছে যা বাংলাদেশে শিল্প উৎপাদন আরও বাড়াবে এবং আরও বিদেশি কোম্পানিকে আকর্ষণ করতে পারবে।’

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫ থেকে ২৮ এপ্রিল জাপান সফর করবেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

সূত্র: রয়টার্স

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর