ঢাকা, বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

‘অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা, বিদেশিদের এগিয়ে আসতে হবে’
অনলাইন ডেস্ক
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে জার্মান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন (ডিইজি) আয়োজিত এক সম্মেলনে চৌধুরী নাফিজ সরাফাত

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসহ অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে উল্লেখ করে এ সুযোগ লুফে নিতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেডের (ইউএমপিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। তিনি বলেছেন, বিদ্যুৎ-জ্বালানিসহ অবকাঠামো খাতে বাংলাদেশ যে প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে, তা অর্জনে বিদেশি বিনিয়োগকারী ও ঋণদাতাদের এগিয়ে আসতে হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে জার্মান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন (ডিইজি) আয়োজিত এক সম্মেলনে বক্তৃতাকালে চৌধুরী নাফিজ সরাফাত এসব কথা বলেন। ব্যাংকক ম্যারিয়ট মার্কিজ কুইন্স পার্কে অনুষ্ঠিত ‘সাউথ-ইস্ট এশিয়া ক্লায়েন্ট ফোরাম ২০২৩-শেপিং ট্রান্সফরমেশন’ শীর্ষক এ সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

এই আয়োজনের জন্য ডিইজিকে ধন্যবাদ জানিয়ে চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, ‘আমরা আজকে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং বন্ধুত্ব উদযাপন করতে এই আয়োজনে যোগ দিয়েছি, যার ফলাফল কেবল একটি নির্বাচিত গোষ্ঠীকে নয়, বরং গোটা বিশ্বের সব পর্যায়ের সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্তরের মানুষকে সমৃদ্ধ করবে। আন্তঃদেশীয় বিনিময় এবং অর্জিত জ্ঞান ভাগাভাগির মধ্য দিয়ে নতুন বৈশ্বিক প্রবণতা ও সুবিধার ব্যবহার করে বিশ্বজুড়ে দেশগুলো ভবিষ্যতের প্রবৃদ্ধি গতিশীল করবে।’

ডিইজির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই সংস্থার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য হলো—বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের সহযোগিতায় উন্নয়নশীল এবং উদীয়মান অর্থনীতিকে সাহায্য করা, যা পশ্চাৎপদ ও সুবিধাবঞ্চিতদের একটি উন্নততর এবং টেকসই ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবে। ডিইজি গত ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে, এই নীতিবাক্য নিয়ে কাজ করেছে এবং সারা বিশ্বে লাখ লাখ মানুষের জীবনমান পরিবর্তনে সাহায্য করেছে। এজন্য আমি বিশ্বের সেই উপকারভোগী মানুষদের পক্ষ থেকে ডিইজিকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই, যাদের জীবন ডিইজি তার অংশীদারত্ব এবং নির্দেশনায় বদলে দিতে সাহায্য করেছে।’

বাংলাদেশ বর্তমান বিশ্বে অর্থনৈতিক উন্নয়নে এক বিস্ময়কর নজির উল্লেখ করে চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, “একসময় এই দেশটিকে বলা হয়েছিল ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’, আর এখন এটি অর্থনীতিতে ‘এশিয়ান টাইগার’ হিসেবে আভির্ভূত হচ্ছে। সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে এখন অর্থনীতিতে উন্নয়নের মডেল হিসেবে ধরা হয়। আর এই উন্নয়নের কারণ অনুসন্ধানে এখন তাবৎ বিশ্বের বড় বড় অর্থনীতিবিদরা রীতিমতো গবেষণা করছেন।”

‘বাংলাদেশ ২০১৬ সাল থেকে ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছিল এবং কোভিড-১৯ মহামারি আঘাতের আগে ২০১৯ সালের মধ্যে ৮ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিল। কোভিডের সময় যখন বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ মন্দা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হ্রাসের মুখে পড়েছিলে, তখনো ২০২০ সালে বাংলাদেশ আকর্ষণীয় ইতিবাচক ৩ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধির হার বজায় রাখে। আর ২০২২ সালের মধ্যে আবার ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির ধারায় পৌঁছে দেশটি। অর্থনৈতিক অগ্রগতির স্থিতিশীলতা এবং ধারাবাহিকতা বাংলাদেশের লাখো মানুষের জীবনযাত্রায়ও সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) তথ্যমতে, আমাদের দারিদ্র্যের হার ১৯৯০ সালে যেখানে ছিল ৫০ দশমিক ৪ শতাংশ, তা ২০১৯ সালে নেমে এসেছে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে।’

এই ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৈশ্বিক বিশেষজ্ঞদের ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বাংলাদেশকে ‘রোলমডেল’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ২০১২ সালে বিশ্বখ্যাত বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকসের ‘পরবর্তী ১১’ তালিকায় স্থান লাভ করে বাংলাদেশ। জে পি মরগান স্যাকস তার ‘ফ্রন্টিয়ার ফাইভ’ তালিকায় স্থান দিয়েছে বাংলাদেশকে। বৈশ্বিক সংস্থা পিডব্লিউসি ২০১৭ সালে ঘোষণা দিয়েছে যে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৮তম অর্থনীতি হবে।’

দেশের এই অন্যতম শীর্ষ উদ্যোক্তা বলেন, ‘দ্রুত প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক দূরদর্শিতা দেখিয়েছে। দেশটি ৩২ দশমিক ৫৫ শতাংশের একটি ঋণজিডিপি অনুপাত বজায় রেখেছে, যা আইএমএফের প্রস্তাবিত ৫৫ শতাংশ থেকে অনেক নিচে। বাংলাদেশ কোনো বিদেশি ঋণ পরিশোধের শর্তে কখনোই খেলাপি হয়নি এবং বছরের পর বছর ধরে সর্বদা দূরদর্শী অর্থনৈতিক চর্চা বজায় রেখেছে এই দেশ। এই উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধিতে অন্যতম বড় অবদান রেখেছে বিদ্যুৎ খাত, যা দেশটির অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত। এই বৃহৎ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গতি দিয়েছে জ্বালানি খাতও, যা দেশে প্রয়োজনীয় জ্বালানি চাহিদা পূরণ করেছে। গত এক দশকে ঈর্ষণীয় অগ্রগতির মাধ্যমে জ্বালানি খাতের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। এটি কেবল প্রবৃদ্ধির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তিই নয়, বরং বিনিয়োগের উল্লেখযোগ্য সুযোগসহ একটি সম্ভাবনাময় খাত।’

তিনি উল্লেখ করেন, সরকারের ‘২০১৬ পাওয়ার সেক্টর মাস্টার প্ল্যান (পিএসএমপি) অনুযায়ী, ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ২০৪১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে ৬০ হাজার মেগাওয়াট। ঘণ্টায় মাথাপিছু বিদ্যুতের ব্যবহার ২০১৯ সালে যেখানে ছিল ৫১০ কিলোওয়াট, ২০৪১ সালে তা দাঁড়াবে এক হাজার ৪৭৫ কিলোওয়াটে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের চাহিদার এই ব্যাপক বৃদ্ধি জ্বালানি উৎপাদনের বর্তমান কাঠামোতেও গতিশীল পরিবর্তন আনবে।

চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, ‘আমরা আরও বৈচিত্র্যময় জ্বালানি উৎসের দিকে দৃষ্টি দিচ্ছি, যা জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং কম গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন নিশ্চিত করতে নবায়নযোগ্যতায় জোর দেবে। এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং দেশটিকে সাশ্রয়ী ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানি, উপযুক্ত কর্মকাণ্ড এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, শিল্প, উদ্ভাবন ও অবকাঠামো এবং জলবায়ু কর্মকাণ্ড বিষয়ক এসডিজি লক্ষ্য ৭, ৮, ৯ এবং ১৪ অর্জনে সহায়তা করবে।’

‘পিএসএমপি অনুসারে, ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা গ্যাসভিত্তিক উৎপাদন ৩৫ শতাংশে নামানোর পরিকল্পনা করছি, যা বর্তমানে ৬০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে কমপক্ষে ১৫ শতাংশ উৎপাদন করতে চাই, যা বর্তমানে মাত্র ২ শতাংশের কাছাকাছি।’

ইউএমপিএল এমডি বলেন, ‘বৈচিত্র্যময় উৎসে চালিত এই জ্বালানিখাতের প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিদেশি বিনিয়োগকারী এবং ঋণদাতাদের এগিয়ে আসতে হবে। তাদের দক্ষতা এবং তহবিল বিদ্যুৎ খাতের দৃশ্যপটকে দ্রুত বদলে দিতে পারে এবং আমাদের দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে পারে। বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ লাভজনক বিনিয়োগ সুযোগ দিচ্ছে। জ্বালানিকে আমাদের সরকার অগ্রাধিকার খাতে পরিণত করেছে এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য এক্ষেত্রেও প্রচুর প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি ও বেসরকারি উভয় প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য এই ধরনের প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। যার ফলে বিপুল লাভজনক বিনিয়োগের দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতে বেসরকারি অংশগ্রহণ বৃদ্ধির জন্য নীতি নির্দেশিকা, ২০০৮-এর মতো বিধিবিধান এই ধরনের বিনিয়োগ কার্যক্রমের অগ্রগতির জন্যই তৈরি করা হয়েছে।’

কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা খাত বিদ্যুতে ক্রমবর্ধমান কর্মশক্তির চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট যোগ্যতাসম্পন্ন গ্রাজুয়েট তৈরি করেছে। ব্যাংক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিও বিদ্যুৎ খাতের বিনিয়োগকারীদের জন্য অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা রাখছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোও রাখছে একই ধরনের সহযোগিতামূলক ভূমিকা। এ কারণেই ডিইজির মতো প্রতিষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগের সুবর্ণ সুযোগ মিলছে।’

তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎখাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শুধু একটি অত্যন্ত লাভজনক শিল্পে বিনিয়োগের সুযোগই পাচ্ছে না, তারা লাখ লাখ মানুষের জীবনমানের পরিবর্তনেও ভূমিকা রাখতে পারছে। উপরন্তু, বিনিয়োগকারীরা সৌর, বায়ু এবং অন্যান্য নবায়নযোগ্য উৎসের মতো বিকল্প খাতে বিনিয়োগ করে বর্তমান শিল্পের চিত্রই পুনর্গঠন করতে পারেন। একটি সহযোগিতামূলক পরিবেশই সাফল্যলাভে সর্বোচ্চ গতি আনতে পারে।’

চৌধুরী নাফিজ সরাফাত আরও বলেন, ‘যখন জার্মানি একটি ফিড-ইন-ট্যারিফ সিস্টেম চালু করেছিল, যেটি কেবল ওই দেশে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি দেয়নি, বরং সৌর প্যানেল উৎপাদন বৃদ্ধিতেও সাহায্য করেছিল, যা এখন চীনে বহুল প্রচলিত। আজ হয়তো বাংলাদেশের জ্বালানি উৎপাদনের প্রয়োজন, অন্যদিকে কিন্তু বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরও লাভজনক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন, যেটা আমাদের বিদ্যুৎ খাত দিতে পারে।  এটি প্রবৃদ্ধি বাড়াবে, বৈশ্বিক বাণিজ্য বাড়াবে এবং অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক জোরদার করবে।’

এক হয়ে কাজ করে সবার জন্য আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, সমৃদ্ধ এবং স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব জানিয়ে এই শিল্পপতি বলেন, ‘এই উদ্দেশ্যে আমি ডিইজিকে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে তার সহায়তা অব্যাহত রাখতে স্বাগত জানাই। এখানে বাংলাদেশি উদ্যোক্তা, ডিইজি বা অন্য যেকোনো বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য পারস্পরিক লাভজনক পরিবেশ বিদ্যমান, যার মধ্য দিয়ে আমরা একসঙ্গে আরও গণতান্ত্রিক, অংশগ্রহণমূলক এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের অগ্রযাত্রায় নেতৃত্ব দিতে পারি।’

ডিইজির সিইওর সঙ্গে চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের বৈঠক সম্মেলনের ফাঁকে ডিইজির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রোনাল্ড সিলারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইউএমপিএলের এমডি চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। 

বৈঠকে তারা বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতের ঈর্ষণীয় অগ্রগতি ও সম্ভাবনা সম্পর্কে আলোচনা করেন। এক্ষেত্রে অব্যাহত সহায়তার জন্য ডিইজি সিইওকে ধন্যবাদ জানান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। এছাড়া দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট আরও বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করেন তারা।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিইজির সিনিয়র ডিরেক্টর (ব্যাংকিং অ্যান্ড জার্মান বিজনেস) পেত্রা কোত্তে, ডিরেক্টর (ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড এনার্জি ডেট) লজার রোকেন প্রমুখ।  



এই পাতার আরো খবর