ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

কাস্টমস সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের আহ্বান বিজিএমইএ সভাপতির
নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফাইজুর রহমানের কাছে পোশাক শিল্পের কাস্টমস সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে মালিকদের উদ্বেগ তুলে ধরেন এবং সমস্যা সমাধানের অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি এস এম মান্নান (কচি)। 

বুধবার বিজিএমইএ সভাপতির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বন্দর নগরী চট্টগ্রামে, কাস্টমস হাউজ চট্টগ্রামের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই অনুরোধ জানান। 

মূলত আমদানিকৃত ওভেন ফেব্রিক্স এর চালান ছাড়করণে ও রপ্তানিতব্য পণ্য চালান জাহাজীকরণে ওজন জনিত সমস্যা, ডকুমেন্টেশন সমস্যা এবং আমদানিকৃত পণ্য চালান খালাসকালে এইচএস কোড সংক্রান্ত জটিলতাসহ কাস্টমস-সম্পর্কিত পরিষেবাগুলোতে বিদ্যমান জটিলতা এবং চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করা হয়।

বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি (অর্থ) মো. নাসির উদ্দিন, সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব, সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী এবং বিজিএমইএ এর পরিচালকগণ এম. আহসানুল হক, মোহাম্মদ মুসা, গাজী মো. শহীদউল্লাহ্, শোভন ইসলাম, হারুন অর রশিদ, মোহাম্মদ সোহেল সাদাত, মো. আশিকুর রহমান (তুহিন), শামস্ মাহমুদ, মো. মহিউদ্দিন রুবেল, মো. নুরুল ইসলাম, বিজিএমইএ এর প্রাক্তন প্রথম সহ-সভাপতিগণ এস.এম. আবু তৈয়ব, নাসির উদ্দিন চৌধুরী, মঈনউদ্দিন আহমেদ (মিন্টু), প্রাক্তন পরিচালকগণ এম. মাহাবুব চৌধুরী, অঞ্জন শেখর দাশ, সাইফ উল্লাহ মনসুর, এ.এম. শফিউল করিম (খোকন)। 

বৈঠকে সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি আকতার হোসেন সহ পোশাক শিল্পের মালিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে কাস্টম হাউস, চট্টগ্রাম এর পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন জয়েন্ট কমিশনার মো. তারেক হাসান, জয়েন্ট কমিশনার মোহাম্মদ নাজিউর রহমান মিয়া, ডেপুটি কমিশনার ইমাম গাজ্জালী এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।

আলোচনাকালে বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান (কচি) পোশাক শিল্পের সার্বিক কার্যক্রম নিরবিচ্ছিন্নভাবে ও মসৃণভাবে পরিচালনা করার জন্য কাস্টমস সংক্রান্ত পরিষেবাগুলো আরও দ্রুততর এবং সহজতর করা-বিশেষ করে আমদানিকৃত কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি দ্রুত খালাসসহ ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াগুলো সহজীকরণ করার উপর জোর দেন।

তিনি বলেন, পোশাক শিল্পের রপ্তানি-আমদানি কার্যক্রমে কাস্টমস সংক্রান্ত প্রক্রিয়াগুলোর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে এবং এ সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে যেয়ে শিল্পে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়, ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াগুলোতেও অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব হয়। 

তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে যখন কিনা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা বিরাজ করছে এবং বিশ্বব্যাপী পোশাক পণ্যের জন্য চাহিদা ও ব্যয় কমা সত্ত্বেও পণ্যের দরপতন হচ্ছে এবং বিপরীতে শিল্পের উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে-এরকম প্রেক্ষাপটে শিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখেতে কাস্টমস প্রক্রিয়াগুলোকে সহজীকরণ, দ্রুততর ও হয়রানিমুক্ত করা অপরিহার্য।

বিজিএমইএ সভাপতি বৈশ্বিক ফ্যাশন বাজারে প্রতিযোগিতামূলক থাকার জন্য লিড টাইম কমানোর উপর গুরুত্ব প্রদান করেন। 

এস এম মান্নান (কচি) বলেন, বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতামূলক থাকার জন্য ও শিল্পে টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে এ খাতে সরকারের নীতি সহায়তা প্রদান অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

তিনি বলেন, রপ্তানির নামে দেশ থেকে অর্থ পাচারের ঘটনা নিন্দনীয়। প্রকৃত রপ্তানিকারকরা কখনই এ ধরনের অপতৎপরতায় লিপ্ত নন। এবং বিজিএমইএও কখনও এ ধরনের কাজ নৈতিকভাবে সমর্থন করে না। বিজিএমইএ মনে করে যারা দেশের অর্থনীতি নিয়ে ছিনিমিনি খেলে তাদেরকে প্রচলিত শাস্তির আওতায় আনতে হবে। 

একইসাথে যারা রপ্তানিকে বাধাগ্রস্ত করে, রপ্তানিকারকদেরকে হয়রানি করে, দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য বিজিএমইএ সভাপতি কাস্টমস হাউজ চট্টগ্রামের কমিশনারকে আহ্বান জানান।

বৈঠকে বিজিএমইএ প্রতিনিধিদল পোশাকখাতের সুবিধার্থে অনতিবিলম্বে কাস্টমস সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতাগুলো দূরীকরণ এবং কাস্টমস পরিষেবাগুলোকে আরও সহজীকরণ, দ্রুততর ও হয়রানিমুক্ত করার জন্য কাস্টমস হাউজ চট্টগ্রামকে অনুরোধ জানান।

প্রত্যুত্তরে কাস্টমস কমিশনার বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পোশাক শিল্পের উল্লেখযোগ্য অবদানের কথা স্বীকার করে নিয়ে বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলকে আশ্বস্ত করে বলেন যে, শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য কাস্টমস হাউজ চট্টগ্রাম একটি অনুকূল ব্যবসায়িক পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য একনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। 

তিনি বলেন, কাস্টমস হাউজ চট্টগ্রাম বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলের সুপারিশগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত



এই পাতার আরো খবর