ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

২০২৩ অর্থবছরে শপআপ-এর রাজস্ব আয় ১৫২৩ কোটি টাকা
অনলাইন ডেস্ক
প্রতীকী ছবি

দেশের অন্যতম বড় বিটুবি কমার্স প্রতিষ্ঠান শপআপ। ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের জন্য সকল প্রক্রিয়া সহজ করে সুনামের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এর সঙ্গে বাড়ছে বার্ষিক রাজস্ব আয়। ২০২৩ সালের জুনের হিসাব অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব ৫৫ শতাংশ বেড়ে ১৫২৩ কোটি টাকায় পৌঁছায়। ২০২২ সালের জুন মাসে যা ছিল ৮৩ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ১০০০ কোটি টাকা।

জানা গেছে, ব্যবসায়ীদের মানসম্পন্ন পণ্য প্রদান, সঠিক সময়ে পণ্য সরবরাহ, বিশ্বস্ত পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা শপআপের এই অগ্রগতির অন্যতম কারণ। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের প্রায় ৩.১ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছাতে পেরেছে। শপআপের এই জনপ্রিয়তার আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হলো দেশজুড়ে তাদের ৪২৭টি হাব। এর মধ্য দিয়ে নিরবিচ্ছিন্ন ডেলিভারি নিশ্চিত করছে প্রতিষ্ঠানটি।

সাধারণত, স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলো যাত্রার শুরুর দিকে অনেকটা লোকসানের পথে হাঁটতে হয়। যার মূলে রয়েছে ব্যবসার পরিধি সম্প্রসারণে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ। এছাড়াও প্রযুক্তি ও জনবল নিয়োগে বিনিয়োগের পাশাপাশি ব্যবসায়িক পরিচালনা ব্যয় প্ররম্ভিক পর্যায়ে কিছুটা বেশি থাকে। তবে এটি ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক অবস্থানে যেতে পথ তৈরি করে। বিশ্বজুড়ে প্রতিষ্ঠিত সব স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানের কেস হিস্ট্রি থেকে এমনটাই জানা যায়।

শপআপ তাদের যাত্রাতেও এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়। আয় বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে তাদের বিক্রি খরচ। তাই খরচ কমানোর দিকে নজর দিয়েছে শপআপ। এই পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে সাপ্লাইয়ারদের সঙ্গে তাদের ব্যবসার আকারের ওপর নির্ভর করে চুক্তিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, অপচয় কমাতে নিজস্ব সাপ্লাই চেইন প্রযুক্তি নির্মাণ এবং ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট উন্নত করা। আশার কথা হচ্ছে বিগত বছরের মোট আয়ের ৪.৫ শতাংশ বিক্রয় খরচ কমাতে পেরেছে শপআপ।

অন্যদিকে, ২০২৩ অর্থবছরে শপআপকে ৪৯ মিলিয়ন ডলার লোকসান গুনতে হয়। তবে ইএসওপি ব্যয় বাদ দিলে এই লোকসান গত বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ কমেছে। শুধু তাই নয়, ২০২৩ সালে ডিসেম্বরে ইবিআইটিডিএ (আর্নিং বিফোর ইন্টেরেস্ট, ট্যাক্সেস, ডিপ্রেসিয়েশন, অ্যামরটাইজেশন) মার্জিন ইতিবাচক ছিল, যা প্রতিষ্ঠানটির লাভজনক যাত্রার পথে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

এছাড়া পরের বছর প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য পিএটি (প্রফিট আফটার ট্যাক্স) লাভজনক অবস্থানে পৌঁছানো। এমনকি, হাব নেটওয়ার্কের ধারবাহিক সম্প্রসারণ, সাপ্লাই চেইনে প্রযুক্তি কার্যকারিতা বৃদ্ধি প্রতিষ্ঠানটির ব্যয় আরো কমাবে।

ভবিষ্যতে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে শপআপ বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে দেশেজুড়ে ডিস্ট্রিবিউশন হাব নেটওয়ার্ক ৭০০-তে উন্নিত করা, যা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ বাড়াতে সাহায্য করবে।

দিন দিন বিভিন্ন উদ্ভাবনী উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও এখন শপআপ-এর সুনামের বিস্তৃতি। বিশ্ববিখ্যাত মার্কিন সাময়িকী ফাস্ট কোম্পানি ২০২৩ সালে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সেরা উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করে। ‘দ্য ১০ মোস্ট ইনোভেটিভ এশিয়া-প্যাসিফিক কোম্পানিজ অব ২০২৩’ শিরোনামের এ তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে ‘শপআপ’।

এছাড়া ৬৯.৫ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ নিয়ে শপআপ বিশ্বের বৃহত্তম বাণিজ্যিক মডেল তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে উপসাগরীয় অঞ্চলে (গালফ রিজিয়ন) তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে। এর মধ্য দিয়ে যোগ্য কর্মীদের খুঁজে বের করে ব্যবসায়িক লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং কার্যক্রমকে আরও বিস্তৃত করতে চায় শপআপ।

বাজারে দৃঢ় অবস্থানে থাকা শপআপ তার প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে, বাজারের পরিধি প্রসারিত করতে এবং দীর্ঘমেয়াদে লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠার ক্ষেত্রে ভালো অবস্থানে রয়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করতে এবং উদীয়মান বাজারগুলোতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রচার করতে তার ব্যবসায়িক মডেলটি ছড়িয়ে দিচ্ছে এবং নিয়মিত নতুন বাজার অন্বেষণ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ



এই পাতার আরো খবর