বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ইফতার ও দোয়া মাহফিলের দাওয়াত কার্ড না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন চিত্রনায়ক ওমর সানি। শুক্রবার বিকেলে ফেসবুক লাইভে এসে তিনি এই অভিযোগ করেন।
অন্যদিকে, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান দাওয়াত কার্ড ওমর সানির বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা জানান।
ফেসবুক লাইভে ওমর সানি বলেন, শিল্পী সমিতি যেভাবে হোক, ভোট দিয়ে অথবা জালিয়াতির মাধ্যমে হোক, মিশা সওদাগর এবং জায়েদ খান এখন শিল্পী সমিতির সভাপতি ও সেক্রেটারি। তাদের পুরো একটা কমিটিও আছে। আজকে ১ জুন শিল্পী সমিতির ইফতার। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে শিল্পী সমিতির ইফতারের দাওয়াত কার্ড আমি ও মৌসুমী পাইনি। সাথে ইরিনের কার্ডটিও পাইনি।
যদিও ইরিন বাংলাদেশের বাহিরে আছে, তারপরও সদস্য হিসেবে তার কার্ড অবশ্যই পাবো। আমি যদি পরিচালক এবং প্রযোজক সমিতির কার্ড না পাই তাতে কোনো দুঃখ নেই। কারণ ওইসব সমিতির সদস্য নই আমি। কিন্তু আমি শিল্পী সমিতির সদস্য।
অন্যদিকে, আমি পরিচালক এবং প্রযোজক সমিতির কার্ড পেয়েছি। কয়েকদিন আগে শিল্পী সমিতির পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন শিল্পী সমিতির জাকির আমাকে দেখেছে তারপরও কার্ডটা দেয়নি। মিশা তুই কয়েকদিন আগে কক্সবাজারে ছিলি, কিংবা ঢাকায় আছিস। তুই তো সভাপতি, তোর তো একটা পাওয়ার আছে। কিন্তু তুই এই পাওয়ার লেস অবস্থায় আর কতদিন থাকবি? বলে মিশার কাছে প্রশ্ন রাখেন সানি।
এসময় অভিনেতা জায়েদ খানকে উদ্দেশ্য করে সানি বলেন, জায়েদ তুমি সেক্রেটারি, ভুলে গেছ তোমাদের বাহবা গাইলে তারা ভালো, না গাইলে খারাপ এটা কিন্তু ঠিক না। তোমাকে, মিশা এবং পুরো কমিটিতে স্বীকার করতে হবে আমি সমিতির সদস্য। এবং সিনিয়র হয়ে গেছি। এছাড়া সিনিয়র শিল্পী ফারুক, আলমগীর, রোজিনা এবং অঞ্জনাদের রীতিমত ক্যাশ করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন সানি। তাদের একটু দৃষ্টি দেয়ার অনুরোধ করেন তিনি।
শিল্প সমিতির ছাঁটাই-বাছাই নিয়েও কথা বলেন সানি। অনেক শিল্পদের ছাঁটাই-বাছাই করা হয়েছে। তার মধ্যে ইরিন। ইরিন ১০/১১টা ছবির হিরোইন। তারপরও ছাঁটাই করা হয়েছে। সেইম, সেইম।
আমি ইফতারে যাবো কিনা মৌসুমীকে নিয়ে কিন্তু সেটা বড় কথা নয়। কিন্তু কার্ডটা তো পাবো। আমি তো যেতেও পারি। আমার অসুস্থতা বা চাচা শ্বশুড় হসপিটালে। সব মিলে নাও যেতে পারি। তারপরও কার্ডটা তো পাবো। এসময় তিনি সমিতির সদস্যদের দৃষ্টি আর্কষণ করেন।
আমি শিল্পী সমিতির কমিটিতে ছিলাম, বলবো না যে আমরা দুধে ধোয়া তুলসী পাতা। কিন্তু আজ কোথায়? যারা চামচামি করবে তাদের নিয়ে ব্যস্ত থাকবে তোমরা, এটা ঠিক না।
আজকে ইন্ডাস্ট্রির যে অবস্থা, এটাকে বাঁচাতে হবে, নিজেদের বাঁচতে হবে। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। আমাদের রিজিকের জায়গাটা কত বড় খারাপ হয়ে গেছে। আজকে আমার যা কিছু আছে সবই চলচ্চিত্রের টাকা দিয়ে। আজকে ওমর সানিকে সবাই চিনে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। শুধু কয় দিন পর পর মহরত করবো ছবি হবে না, আর আমি বললাম আমারে ছাড়া চলচ্চিত্র অচল। আর আমার একটা ছবিও চলবে না। তাহলে কিভাবে বলবো আমি ছাড়া চলচ্চিত্র চলবে না।
ওমর সানি লাইভে আরও বলেন, প্রবেশনাল শিল্পীদের বাদ দিতে হবে। তাদের রেখে আমাদের সমিতি। যাচাই-বাছাই করে মানুষকে অপমান অপদস্ত করার অধিকার তোমাদের নেই। আবার বলা হবে আমরা কিছু করিনি, জাস্ট মুখ দেখাদেখি করেছি। তাদের ভোটেই তোমরা পাস করেছো। তোমরা ভোটে পাস করেছো নাকি কি করছো। আল্লাহ ভালো জানে। আমি জাতির কাছে দিবো। আমি ফেল করেছি বলে বলছি, সেটা কিন্তু নয়।
ক্ষমতায় কিন্তু কেউ সারাজীবন থাকতে পারে না। মিশা তোমারাও থাকতে পারবে না। আরও কেউ না কেউ আসবে।
অন্যদিকে জায়েদ খান ফেসবুকে ওমর সানির পোস্টের নিচে মন্তব্য করেন, 'আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে। আপনার কার্ড আমি নিজে দিতে আপনার বাসায় গিয়েছি, কিন্তু আপনার বাসায় কেউ না থাকার কারণে আমি আপনার গার্ডের কাছে তার রিসিভ সই সহ কার্ড দিয়ে আসছি।'
এমনকি জায়েদ খান গার্ডের স্বাক্ষরের স্ক্রীনশর্ট তুলে ধরেন। জবাবে ওমর সানি একটি ভিডিও ক্লিপ তুলে ধরেন। সেখানে সানির বাসার গার্ডরা দাওয়াত কার্ড পাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
উল্লেখ্য, আজ ১ জুন বড় পরিসরে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি।
বিডি প্রতিদিন/০১ জুন ২০১৮/আরাফাত