তিনি ঘুমুতে গিয়েছিলেন রাত তিনটায়। ভোর ৭টায় বিছানা ছেড়েই ফোন করলেন ইরাকে, সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ খবর নিলেন। চীনের ফলো আপ, ফোন করতে হলো ইতালিতে, সেখানকার অবস্থা খুবই নাজুক। টিমের মেম্বার, এডভাইজার, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা। এর মাঝেই বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে মিডিয়ার ফোন। সেগুলোও এটেন্ড করতে হয়।

একজন মানুষের দিনলিপি হিসেবে তালিকাটা কেমন লাগছে? মঙ্গলবার সকালে কানাডার সিবিসির জনপ্রিয় অনুষ্ঠান The St. John's Morning Show এ জেনেভা থেকে যুক্ত হবার আগেই তাকে এতোগুলো কাজ সারতে হয়েছে। শোতে যুক্ত হবার আগে তিনি জানিয়ে রাখলেন ১৫ মিনিটের মধ্যে তাকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সভায় যোগ দিতে যেতে হবে। এটি কেবল মঙ্গলবারের চিত্র নয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর থেকেই তার জীবন হয়ে গেছে এমন, তাকে দৌড়াতে হয় ঘড়ির কাঁটার আগে আগে।

এই ভদ্রলোকের নাম ড. ব্রুস আইল্ওয়ার্ড। চীনে করোনা নামের নতুন ভাইরাসটি যখন আগ্রাসী হয়ে ওঠে, তখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্মরণাপন্ন হয় কানাডিয়ান এই চিকিৎসকের। তাকে দায়িত্ব দেয়া হয় চীন এবং বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার যৌথ টিমের নেতা হিসেবে। তার নেতৃত্বেই চলে চীনকে করোনা থেকে উদ্ধারের অসাধারণ লড়াই। সেই লড়াইয়ে ব্রুসের দল জয়ী।

ব্রুসকেই কেনো খুঁজলো বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা? কারণ তার অভিজ্ঞতা। পোলিও, ইবোলা, জাইকা, সার্স – গত ৩০ বছরে যে কয়টি নতুন ভাইরাস আক্রমণ করেছে মানবজাতিকে, প্রতিটি ভাইরাসের বিরুদ্ধেই লড়েছেন এই চিকিৎসক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যখনি বুঝতে পারলো- করোনা স্বাভাবিক কোনো ভাইরাস নয়- তখনি ডাক পড়লো  ব্রুস আইলওয়ার্ডের । আর তিনিও ঘড়ির কাটার দিকে না তাকিয়ে দিনে-রাতে লড়াই করছেন নতুন এক ভাইরাসের হাত থেকে মানব সভ্যতাকে বাঁচানোর জন্য। প্রাউড অব ইউ কানাডিয়ান ডক্টর। তোমাকে স্যালুট, ব্রুস।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

লেখক: প্রকাশক ও সম্পাদক, নতুন দেশ ডটকম

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা