ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

স্মৃতির পাতা থেকে
অধ্যক্ষ শাহজাহান সাজু
অধ্যক্ষ শাহজাহান সাজু

এতো বড় বিজ্ঞান ও প্রধানমন্ত্রীর স্বামী হয়েও তিনি অতি সাধারণ জীবনযাপন করতেন।

বাংলাদেশ তথা এই উপমহাদেশের প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী ডক্টর এম এ ওয়াজেদ মিয়ার আজ ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ও বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ জামাতা পরমাণুবিজ্ঞানী ডক্টর এম এ ওয়াজেদ মিয়া ২০০৯ সালের ৯ মে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।

উপমহাদেশের খ্যাতিমান বিজ্ঞানী ডক্টর ওয়াজেদ মিয়ার জন্ম ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জের লালদীঘি ফতেপুর গ্রামে। মুক্তিযুদ্ধের আগে ছাত্রলীগ নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল ছাত্র সংসদের ভিপি হিসেবে আইয়ুব খানবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন তিনি। এ কারণে ১৯৬২ সালে গ্রেফতার হন।

ওয়াজেদ মিয়া ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সময় জার্মানিতে ছিলেন। এরপর একটানা প্রায় সাত বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে দেশে ফেরেন।

ডক্টর ওয়াজেদ মিয়া অত্যন্ত সহজ সরল প্রকৃতির এবং অসম্ভব মিশুক একজন মানুষ ছিলেন। অবসরকালীন সময়ে তিনি শাহবাগে আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেটে বৃহত্তর রংপুর সমিতির অফিসে মাঝে মাঝে বসতেন।

তিনি এই সমিতির সভাপতি ছিলেন। এই অফিসের পাশেই ছিল আমার অফিস। সমিতির অফিস বন্ধ থাকলে অথবা খুলতে দেরি হলে তিনি আমার অফিসে এসে বসতেন। এভাবেই ডক্টর ওয়াজেদ মিয়ার সাথে আমার একটা গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠে।

তিনি অত্যন্ত সহজ-সরল ও অমায়িক মানুষ ছিলেন। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা প্রথমবার যখন প্রধানমন্ত্রী হন তখন প্রধানমন্ত্রীর স্বামী হিসাবে সরকারি অনেক নিরাপত্তা ও প্রোটকল পেতেন। তিনি এসব প্রটোকল মানতেন না। একা একাই চলে আসতেন। নামমাত্র একজন গ্যানম্যান থাকতো। ১৯৯৯ সালে আমার বৌভাত অনুষ্ঠানে তাকে দাওয়াত দিলে তিনি সাদরে তা গ্রহণ করেন। সংসদ ভবনে এমপি হোস্টেলে বৌভাত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।

অনুষ্ঠানের আগের দিন রাতে বিএনপি-জামায়াত হঠাৎ করে হরতাল আহ্বান করে। এমতাবস্থায় অনুষ্ঠান পেছানোও সম্ভব ছিল না। অনুষ্ঠানের দিন তিনি একটি গিফট ও চিঠি দিয়ে তার গ্যানম্যানকে পাঠান।

তিনি লিখেন, 'বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে তোমার বৌভাতে আসতে পারিনি। তুমি এবং বৌমার প্রতি দোয়া রইল'। তার মত এতো বড় একজন মানুষের বিনয় দেখে সেদিন হতবাক হয়েছিলাম।

জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানের মৃত্যু দিবসে গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত



এই পাতার আরো খবর