ঢাকা, সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

কিন্তু বিষ্যুদবারের পত্রিকা আমার কিনতেই হবে...
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

আমাদের সময়ে সংবাদ পত্রিকার সাহিত্য সাময়িকী ছিলো সবচেয়ে বিখ্যাত সাহিত্য পাতাগুলার একটা। আবুল হাসনাত সম্পাদনা করতেন। সম্ভবত বিষ্যুদবারে বাইর হইতো। মনে আছে, ঐদিন সকাল সকাল নাখালপাড়া রেলগেইটে হকারের স্টলে গিয়া হাজির হইতাম। ঐ একদিনই আমি সংবাদ কিনতাম। বাকি ছয় দিন স্টলে দাঁড়াইয়াই পুরা পত্রিকা পড়ে ফেলতাম। কিন্তু বিষ্যুদবারের পত্রিকা আমার কিনতেই হবে এবং বাসায় আইসা সোফায় বইসা আরাম কইরা পড়তে হবে।

তার পর বয়স বাড়ল। এক সময় আমার নিজের লেখাই ঐ পাতায় ছাপা হইতে লাগলো। প্রথম লেখা ছাপা হওয়ার পর নিজেই নিজের লেখা পড়ছি অজস্রবার, একবারও ক্লান্ত না হইয়া। তারপর একদিন সম্পাদক সাহেব দেখা করতে আমন্ত্রণ জানাইলেন। গেলাম অফিসে। সাদরে বসাইলেন। বললেন, লেখা খুব ভালো হয়েছে। আরও লিখুন। যে কোনো বিষয়ে, যতটুকু ইচ্ছা। ত্রিশ সেকেন্ডে কথা শেষ! তারপরও বেশ কিছুক্ষণ বসে রইলাম। দেখলাম যে, আমরা দুইজনই বোধ হয় কথা খুঁজে পাচ্ছি না! 'আজকে উঠি' বলাতে আবারও বললেন, খুব ভালো লেখা হয়েছে। গভীর বিশ্লেষণ! আপনি লিখুন আরও।

এরপর আরও লিখছি এবং একসময় আমরা একই প্রতিষ্ঠানে কাজ করছি। সিনেমা, সাহিত্য নিয়ে কত আলাপ করছি! আসলে আমিই বেশি বলতাম! হাসনাত ভাই সূত্র ধরাইয়া দিতেন!

হাসনাত ভাই আর আমি দুইজন দুই ঢংয়ের মানুষ। উনি শান্ত, আমি সর্বদাই টগবগ করতাম। কিন্তু আমাদের কিরকম করে যেনো একটা মৃদু বন্ধুত্ব হয়ে গেলো।

তারপর বহু বছর যোগাযোগ নাই। জীবন বাবু আমাকে নিয়ে আসলো দূরে। 

আজকে শুনলাম, হাসনাত ভাই আর নাই। অনেক স্মৃতি মনে পড়ছে। এইতো জীবন! জীবনভর স্মৃতি জমাবো আর মাঝেমধ্যে ভল্ট থেকে খুলে দেখবো। তারপর একসময় চলে যাবো! অন্যরা তাদের ভল্ট খুলে দেখবে।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা



এই পাতার আরো খবর