ঢাকা, রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

কিপটের টুপি বানানোর গল্প
মো. আখতারুজ্জামান
ভূমিহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর যা অল্পদিনে ভেঙে গেছে।

এক হাড় কিপটে একটুখানী কাপড় কিনে দর্জির কাছে গিয়ে বলল একটা টুপি বানিয়ে দিতে। দর্জি রাজি হলে কিপটে চলে গিয়েও আবার ফিরে এল ভাবল একই কাপড় দিয়ে যদি ২টি টুপি বানাতে পারে কিনা? দর্জিকে বলল দুইটা টুপি বানিয়ে দিতে। দর্জি রাজি হলো। কিপটে হাসি মন নিয়ে ফিরে গেল। কিন্তু আবার তার মনে হলো ৩টি টুপি বানালে হয়। দর্জিকে বলল তিনটি বানাতে। দর্জি আবারও সহজে রাজি হলে কিপটে ক্রমান্বয়ে ৪টি, ৫টি টুপি বানাতে বলল। 

যথা সময়ে টুপি ডেলিভারী নিয়ে দেখে টুপিগুলোর সাইজ এত ছোট যে মাথায় দেয়া যায় না। কিপটে খেপে গিয়ে দর্জিকে ধরলে দর্জি সহজ জবাব দেয় একটা টুপির কাপড় দিয়ে ৫ টুপি বানালে তা মাথায় দেয়া যায় না।

উপজেলা পর্যায়ে গরীবদের জন্য বাড়ি বানানো হয়েছে। কত কম দামে বানানো যায় মনে হয় তার প্রতিযোগিতা হয়েছে-কর্তৃপক্ষকে তেল মারার, খুশি করার।

দেশে এলজিইডি এর এস্টিমেট আছে এখানে তা ফলো করা হয় নাই। পিডাব্লিউডি এর এস্টিমেট আছে সেটাও ফলো করা হয় নাই। প্রাইভেট কোম্পানি পার স্কোয়ার ফুট ১০ হাজার টাকা নেয়, সেটাতো কল্পনা করা যায় না। এখানে সম্ভবত দুইটি ঘর দেয়া হয়েছে তার খরচ হয়েছে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা মাত্র। পাইলিং করা হয় নাই, মাটি কমপ্যাক্ট করা হয় নাই, লিংকার বা লিনটন করা হয় নাই, লোহা বা রড ব্যবহার নাই। ঠিকাদার লাভ ছাড়া কাজ করবে ভাবা যায়? তাড়াহুড়ার তো অন্ত ছিল না।

এখন সরকারি কিছু অনভিজ্ঞ কর্মকর্তার চাকরি নিয়ে জটিলতা তৈরি হবে, কিছু জনপ্রতিনিধির মান সম্মান নিয়ে টানাটানি হবে। মিডিয়া সরব হবে।

এটার জন্য সাজা হতে পারে যিনি এই এস্টিমেট করেছে কিংবা তৈল মর্দন করে কর্তৃপক্ষকে খুশি করার জন্য এগুলো করেছে। কম দামে ভাল জিনিস পাওয়ার চিন্তা অতি উর্বর মস্তিষ্ক হতেই আসে? কথায় বলে সস্তার বারো অবস্থা।

আমরা যদি ৫ লাখ টাকা দিয়ে দুইটি করে ঘর দিতাম তাহলে কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যেত। টাকটাতো আমাদের দেশের গরীবরাই পেত। আমরা তেলা মাথায় তেল দিতে অত্যন্ত শিদ্ধহস্ত। রাজউক পূর্বাচলে বা উত্তরায় যে প্লট ১০ লাখ টাকায় বরাদ্দ দিয়েছে তার বতর্মান বাজার মূল্য তিন থেকে ১০ কোটি টাকা। একজন মানুষ ঘুম থেকে উঠে দেখে সে অনেক বড়লোক। ধনীদেরকে যদি রাতারাতি আরও বড়লোক বানানো যায় তাহলে গরীবদেরকে ৫ লাখ টাকার বাড়ি দিতে কার্পণ্য কেন?

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হাজার কোটি টাকা ব্যবসায়ীসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে প্রণোদনা দিচ্ছেন। তার কিছু অংশ গরীবরা পেতে পারেনই। মুজিবর্ষ উপলক্ষে এখনও সময় নিয়ে কিছু বাড়ি বেশি দামে বানিয়ে বিতরণ করা যেতে পারে। শুধু পাওয়াটাই বড় না তারা যেন বাকী জীবনটা ওই বাড়িতে বসবাস করতে পারেন। জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে। সত্যিকার অর্থে গরীবরা উপকৃত হবে।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন



এই পাতার আরো খবর