ঢাকা, রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

দুই হাতে কবর দিয়ে আসলাম বন্ধু মিতুকে, কি যে যন্ত্রণা!
রকি আহমেদ
দুর্ঘটনায় নিহত মিতু

গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে সোনাইমুড়ীতে রওনা দিলাম ব্যাচের ৩৫ জন। মিতুর দ্বিতীয় জানাযায় শরিক হলাম। শেষ দেখা আর হলো না। দেখিনি। কারণ আমার চোখে পূর্বের মিতুর চেহারাই থাক। চাকায় পিষ্ট হওয়া, মগজহীন, বিকৃত চেহারা কেন দৃশ্যপটে থাকবে। মিতুর পরিবার মিডল ক্লাসের। তিন মেয়ের ভিতর সে বড়। অনেক কষ্ট করে চাচা মানুষ করেছে ঢাকায়। আজ সব সর্বশান্ত। মামলা করতে ভয় করছিল আর্থিক ও চাপে। ভরসা দিলাম আমরা সহপাঠী, বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয়। 

থানায় ফোন করে এজাহার করা হলো সড়ক ও পরিবহন আইনে। কবরের বাঁশ সহপাঠিরা হাতে হাতে বহন করে দাফন সম্পন্ন করলাম। কি যে যন্ত্রণা! আমাকে অনেকে বলেন শক্ত মানুষ। কিন্তু তোর সাথে আমাদের স্মৃতি কেন দু'চোখ বেয়ে ঝরে। 

রাস্তায় রক্তের দাগ এখনো শুকায় নাই। শুকনো মগজও পড়ে আছে। তোর কাছ থেকে নেয়া প্রথম বর্ষের ২০ টাকা রিকশা ভাড়ার ঋণ আর শোধ করা হলো না। তবে জানি, এখন তুই চাস তোর হত্যার বিচার। নানা বাড়ির সামনেই সবাইকে কেঁদিয়ে বিদায় নিতেই রাস্তায় উঠে রং সাইড থেকে ট্রাককে থামাতে হাত ইশারা করলি। থামবে কিভাবে, তার তো লাইসেন্সই নেই। নেই বয়স। 

কানে হেডফোন আর তোর খালাতো ভাইয়ের ভাষ্যমতে ইটবাহী ট্রাকের সে ঘাতক চালক ছিল মাতাল,,,তোর ভাঙা চশমা ও রক্ত মাখা জুতা কোলে নিয়ে কাঁদছে তোর বোন। তোর নানুর পাকা দাড়ি বেয়ে পড়ছে অশ্রু। তোর হত্যার বিচার হবে দেখিস। পরপারে ভালো থাকিস বন্ধু...

লেখক: শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

(সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মিতুর সহপাঠির ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত



এই পাতার আরো খবর