ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

২৪ বছর আগে বহু প্রলোভন আর বন্ধন ছিন্ন করে এদেশে আমি ফিরে এসেছিলাম
অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল
অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল (ফাইল ছবি)

আজ ছিল আমার চেয়ারম্যান জীবনের শেষ দিন। শেষ দিনে ফুল পেলাম, কেক, শুভেচ্ছা-ভালোবাসা, খাওয়া-দাওয়াও হলো অনেক।

২৪ বছর আগে বহু প্রলোভন আর বন্ধন ছিন্ন করে এদেশে আমি ফিরে এসেছিলাম। ফিরে যে এসেছিলাম তার একটা বড় কারণ ছিল আইন বিভাগ। এখানকার করিডোরে আর ক্লাসরুমে কতো অবিনশ্বর মুর্হূত কাটলো আমার, কত আকাশ, মেঘ, রোদ-ছায়া আর সবুজ ঘাসে অঝোড় বৃষ্টি দেখা হলো এতো বছরে। কত চেয়ারম্যান দেখলাম এখানে, কাউকে মনে হতো জ্ঞানী ঋষির মতো, কাউকে নিরস বাবার মতো, কেউ আত্মম্ভরী বড় ভাইয়ের মতো। একদিন চেয়ারম্যানরা আমার সমবয়সী হলো, একদিন আমি নিজেই চেয়ারম্যান হলাম। আজ আমার সেই সময় শেষ হলো। ক্রমে ক্রমে সময় কি দ্রুতগামী হয়ে গেল আমাদের স্বল্প জীবনে।   

২. চেয়ারম্যান হয়ে আরও কাজ করা উচিত ছিল আমার, আরও সময় দেয়া। কিন্তু পারিনি বা হয়তো পারিনি যে এটা ঠিক সময়ে বুঝতে পারিনি। এই বেদনা কখনো আমার জন্য নতুন কিছু না। 

চেয়ারম্যান জীবনে আমার নিজের অবশ্য বহু লাভ হয়েছে। আরও নিবিষ্টভাবে আমাদের প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীদের নানা ধরনের সাফল্য আর মেধাবী শিক্ষকদের বিভিন্ন অর্জন উপভোগ করেছি। শত রাজনীতি আর প্রতিকূলতার মধ্যেও আমাদের অটুট বন্ধন অনুভব করেছি, মনে হয়েছে ভালোবাসা আর ন্যায়বোধ পৃথিবীর সবচেয়ে হিংস্র রাজনীতির চেয়েও শক্তিশালী। আমার কলিগ আর কমকর্তা-কর্মচারীদের থেকে অনেক কিছু শিখেছি, যা যে শেখার মতো সেটাই জানতাম না আগে।  

৩. আগামীকাল এবং এরপরে হয়তো আরও কিছু বছর আমি থাকবো এখানে। বহুবার শূন্য বা কলরবময় করিডোর বা সামনের খোলা জায়গাটার দিকে তাকিয়ে থাকবো। দেখবো কেমন করে বদলে বদলে যায় কৃষ্ণচূড়া বা রাধাচূড়ার গাছ, কেমন করে একই দৃশ্য বারবার ফিরে আসে একটা মাঠেই। 

আরও গল্প লিখবো, আরও গবেষণা হবে। কিন্তু আমি জানি কোনো দিন বলতে পারবো না আকাশের দিকে বাহু বাড়িয়ে দেয়া এই জায়গাটা আসলে কি আমার জীবনে।

ভালোবাসা আইন বিভাগ।

লেখক : অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত



এই পাতার আরো খবর