ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

সাহরি নিশ্চিত করতে রাত জাগেন গুলাব যাদব
দীপক দেবনাথ, কলকাতা

রাত তখন ৩টা। উত্তরপ্রদেশের আজমগড় জেলার মুবারকপুর গ্রামের সব বাসিন্দা তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। কিন্তু তখনও জেগে আছেন গুলাব যাদব (৪৫), সঙ্গে আছে তার ১২ বছরের ছেলে অভিষেক। 

বাবা-ছেলে মিলে রাত ১টায় জেগে ওঠে এবং প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে গ্রামের মুসলিম পরিবারগুলে জাগিয়ে তোলেন, যাতে তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই পবিত্র রমজানের সাহরি খেয়ে নিতে পারেন এবং রোজা শুরুর আগে আজানটাও সেরে নিতে পারেন। রাত থেকেই প্রতিটি মুসলিম পরিবারের দরজায় গিয়ে কড়া নাড়েন এবং ঘুম থেকে তারা না ওঠা পর্যন্ত দরজার বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকেন। 

১৯৭৫ সালে অসাধারণ এই ট্রাডিশন চালু করেছিলেন গুলাবের বাবা চিরকিত যাদব। সেই থেকে চলে আসছে এই নিয়ম। সেইসময় বাবার সঙ্গে এই কাজ করতেন গুলাব। গুলাব তখন খুবই ছোট। চিরকিতের মৃত্যুর পর গুলাবই সেই দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। 

গুলাব জানান, ‘আমার মনে হয় এই জিনিসটা মনকে শান্তি দেয়। এটাই শেষ কথা। আবার বাবার পরে আমার বড় ভাই কয়েক বছর ধরে এই কাজ করে এসেছেন। এরপর আমি এই কাজ শুরু করি এবং প্রতি রমযান মাসেই গ্রামে চলে আসি। দিল্লিতে দিন মজুরের কাজ করেন গুলাব। বেশিরভাগ সময়টা সেখানেই কাটাতে হয়। কিন্তু রমজান মাসে দিল্লি থেকে নিজের গ্রামে ফিরে আসেন গুলাব’। 

গুলাবের এক প্রতিবেশি শফিক জানান, ‘দেখুন এটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় একটি কাজ। গোটা গ্রাম ঘুরতে তাঁর ৯০ মিনিট সময় লাগে। প্রথমবার চক্কর দিয়ে ফিরে এসে ফের দ্বিতীয়বার প্রতিটি পরিবারের দরজায় গিয়ে সজাগ করে। যাতে আজানের আগে কেউ সাহরি করতে ভুলে না যায়।’

 

বিডি-প্রতিদিন/ ২৭ জুন, ২০১৬/ আফরোজ

 



এই পাতার আরো খবর