কাঁঠাল জাতীয় ফল। বাংলাদেশের সর্বত্রই কাঁঠালের চাষ ও ফলন লক্ষ্য করা যায়। এটি অন্যতম ও উল্লেখযোগ্য ফল। গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতি বাড়িতেই দু-একটি কাঁঠাল গাছ থাকলেও ব্যবসায়িক ভিত্তিতে কাঁঠাল চাষ করার কথা কৃষক ভাবেন না। কিন্তু কাঁঠালের জনপ্রিয়তা ও চাহিদা প্রচুর। সহজে এবং অতি অল্প খরচে কাঁঠাল চাষ করে বছরে যথেষ্ট অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। সব ধরনের মাটিতে কাঁঠাল চাষ করা যায়। তবে এঁটেল-বালু মিশ্রিত মাটিতে কাঁঠাল গাছের ভালো বৃদ্ধি হয় এবং ফলনও ভালো হয়।
স্থানীয়ভাবে কাঁঠালের বেশ কয়েকটি উন্নত জাত রয়েছে। তার মধ্যে গাছ কাঁঠাল, বড় কাঁঠাল এবং পাতা কাঁঠাল উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া কাঁঠালের আরও কয়েকটি উন্নত জাত রয়েছে। বীজ থেকে চারা করে সহজেই কাঁঠালের চাষ করা যায়। অন্যদিকে কলম দিয়েও সহজে কাঁঠালের চারা তৈরি করা যায়। গাছের এক বছর বয়সী ডালে কলম দিতে হয়। বীজ থেকে প্রস্তুত করা এক বছরের চারা বা কলম দিয়ে তৈরি করা ছয় মাসের চারা মূল খেতের মাটিতে রোপণের উপযুক্ত হয়।
চারা রোপণের জন্য ১০-১২ মিটার দূরত্বে ১ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১ মিটার প্রস্থ আকারের গর্ত তৈরি করে নিতে হবে। গর্তের মাটির সঙ্গে পচনসার ভালো করে মিশিয়ে গর্তটি ভরে দিতে হবে। চারা রোপণের ১০-১২ দিন আগে প্রতিটি গর্তে ২০০ গ্রাম ইউরিয়া এবং ১৫০ গ্রাম সুপার ফসফেট সার মিশিয়ে দিতে হবে। রোগ-পোকার আক্রমণ হলে অবশ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া দরকার। গাছে পোকা আক্রমণ করলে সেভিন ৪ গ্রাম ১ লিটার এবং ছোট ছোট ফলে পোকার আক্রমণ দেখা দিলে ইন্ডোফিল-এম-৪৫ ২ গ্রাম ১ লিটার পানির সঙ্গে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। মাটিতে সারের অভাব হলে ফল ভালোভাবে পরিপুষ্ট হয় না। ফলগুলো যখন শুকিয়ে ঝরে পড়ে যায় তখন সার প্রয়োগের সময় গাছে ১০০ গ্রাম বারক্স প্রয়োগ করতে হবে।