ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

হারিয়ে যাচ্ছে বিরল পাখি কালো তিতির
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ছবি: আব্দুল্লাহ আল মামুন, স্থান: তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়

বিরল আবাসিক পাখি কালো তিতির। দেখতে অনেকটা মুরগির মতো। দেশের যত্রতত্র দেখা যাওয়ার নজির নেই। বছর ত্রিশেক আগেও ঢাকা-চট্টগ্রাম বিভাগের পাতাঝরা বনে দেখা যেত। বর্তমানে একমাত্র পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অল্প কিছু স্থানে দেখা যায়।

দু-চারটি পাখি যদিও নজরে পড়ে তা আবার শিকারিদের টার্গেটে পরিণত হয়। ফলে এ প্রজাতি খুব দ্রুতই দেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। প্রজাতিটির সংরক্ষণের ব্যবস্থা না নিলে এক দশকের মধ্যেই কালো তিতির বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ ছাড়াও উত্তর ভারত, আসাম, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যা, নেপাল, পাঞ্জাব, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, পূর্ব তুরস্ক এবং পূর্ব আফগানিস্তানে এদের বিচরণ রয়েছে। এরা বিশ্বে বিপন্মুক্ত হলেও বাংলাদেশে মহাবিপন্নের তালিকায় রয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে প্রজাতিটি সংরক্ষিত হয়েছে। 

কালো তিতির পাখি পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী চা বাগান এলাকায় বিচরণ করে। এরা একাকি কিংবা জোড়ায় জোরে থাকে। ভোরে এবং গোধূলিলগ্নে শিকারে বের হওয়ার সময় এরা তীক্ষ্ণ স্বরে ডাকে। পুরুষ পাখি প্রজনন মৌসুমে গলাটান করে উচ্চস্বরে চেঁচায়। এ পাখি বেশ উড়তেও পারে। তবে হেঁটে বা দৌড়েই অভ্যস্ত বেশি।

এরা লম্বায় ৩৪ সেন্টিমিটার হয়। ওজন ৪৩০ গ্রাম। পুরুষ পাখির পিঠ ঘন-কালোর ওপর সাদা ও মেটে তিলা দাগ। মাথায় কালোর ওপর সাদা তিলা। মুখ কুচকুচে কালো। গাল সাদা, গলাবন্ধ লালচে। দেহ কুচকুচে কালো। 

অপরদিকে স্ত্রী পাখির পিঠ ফিকে ও বাদামি। ঘাড়ের নিচের অংশ লালচে। কান-ঢাকনি হালকা পীত রঙের। দেহের রয়েছে সাদাকালো ডোরার উপস্থিতি। লেজের তলা তামাটে। উভয়েরই ঠোঁট কালো। চোখ বাদামি। অপ্রাপ্তবয়স্কের বর্ণ স্ত্রী পাখির মতো। ওদের কালো বুকে সাদা তিলা দেখা যায়।

প্রধান খাবার শস্যদানা, কচিপাতা, পোকামাকড় ও ফল। প্রজনন মৌসুম মার্চ থেকে অক্টোবর। লম্বা ঘাসের ঝোপে, আখ খেতে অথবা মাটির গর্তে ঘাস বিছিয়ে বাসা বানায়। ডিম পাড়ে ৬-৯টি। স্ত্রী পাখি নিজেই ডিমে তা দেয়। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৮-২০ দিন।

 

বিডি প্রতিদিন/ অন্তরা কবির



এই পাতার আরো খবর