ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জে বন্যায় তাঁতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, শতশত কারখানা বন্ধ
বেকার শ্রমিকদের মানবেতর জীবনযাপন
আব্দুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ

বন্যায় সিরাজগঞ্জের তাঁত শিল্পের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। সুতা, বিম, ত্যানা, নলি ও মোটরসহ সব পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তাঁত প্রতি প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হওয়ায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক তাঁত মালিকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। আর কাজ না থাকায় তাঁত শ্রমিকদের অবস্থাও করুন। কর্ম না থাকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে তাঁতের সাথে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা। এ অবস্থায় ঘুরে দাঁড়াতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোর সহায়তা দাবি করেছেন তাঁতিরা। 

জানা যায়, মাত্র দুই সপ্তাহের বন্যায় সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুরের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যায়। ফলে এসব এলাকার অধিকাংশ মানুষের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন তাঁত কারখানাগুলো তলিয়ে যাওয়ায় তাঁতিরা ক্ষতিগ্রস্ত। জেলার প্রায় ৫ হাজার তাঁতের কাপড়সহ তাঁতের প্রধান উপকরণ সুতা-মাকড়-ত্যানা-মোটর ও নলি ও তাঁতগুলো সবকিছু নষ্ট হয়েছে। আয় রোজগার না থাকায় এসব তাঁত মালিকরা দিশেহারা। শুধু তাঁত মালিক নয়-এর সাথে জড়িত কয়েক হাজার নারী-পুরুষ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ায় তারাও অতিকষ্টে জীবনযাপন করছে। একদিকে করোনা মহামারী আরেকদিকে বন্য, দীর্ঘসময় ধরে বেকার থাকায় ক্ষুধা-দারিদ্র্য এখন তাদের নিত্য সঙ্গী। 

সদর উপজেলার পুর্বমোহনপুর ও বাঐতারা গ্রামের তাঁতি নুরুল ইসলাম, ইয়াসিন ও কাওসারসহ অনেকে জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ তাঁত কারখানাগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে ছিল। ফলে তাঁতের সাথে লাগানো কাপড়, সুতা, মোটর সবকিছু নষ্ট হয়ে পড়েছে। তাঁত প্রতি প্রায় ৪০-৫০  হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। এ অবস্থায় সরকার সহায়তা না করলে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব না। তাঁত শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে। তারা অভিযোগ করে বলেন, একদিকে আয় রোজগার নেই। তার ওপর বেসরকারি সংস্থাগুলো কিস্তির জন্য চাপ দিচ্ছে। নানা ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। সবমিলিয়ে আমরা দুর্বিষহ অবস্থায় জীবনযাপন করছি। 

তাঁত শ্রমিকরা জানান, করোনা থেকে বন্যা পর্যন্ত প্রায় ৫-৬ মাস যাবত কাজকর্ম নেই বললেও চলে। পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়ে না খেয়ে জীবনযাপন করছি। কিন্তু সরকারি কোনো সহায়তা পাইনি। 

জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহম্মদ জানান, তাঁত শ্রমিকদের জিআর চাল ও নগদ কিছু অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। আর ক্ষতিগ্রস্ত তাঁতিদের তালিকা তৈরি করে সহায়তা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠি হয়েছে। সেখান থেকে সহায়তা পেলে তাঁতিদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। 

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা



এই পাতার আরো খবর