ঢাকা, বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

সোনারগাঁয়ে মেঘনার চরে শুভ্র কাশবন
মুহাম্মদ আল আমিন (সোনারগাঁও)

গ্রামীণ জীবনধারার সঙ্গে কাশফুল বা কাশবনের সম্পর্ক সেই আদিকাল থেকে। একদিকে সাদা মেঘের ভেলা অন্যদিকে কাশের ছোঁয়া। দৃষ্টিনন্দন এই কাশের মেলা বসেছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের মেঘনা নদীর চরে। প্রায় একশ' একর চর জুড়ে দেখা মেলে এমন কাশবনের। সৌন্দর্য উপভোগ করতে যেখানে প্রতিদিনই ছুটে যান হাজারো দর্শনার্থী।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পর্যটনপ্রেমি অসংখ্য মানুষের ভিড়। কাশবনে সৌন্দর্য দেখতে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও নরসিংদীসহ আশপাশের জেলার ভ্রমণপ্রেমীরাও ভিড় জমান। অনেকে দলবেধে নৌকা বা ট্রলার নিয়ে বেড়াতে যান চরে। কাশফুল কাছে পেলেই ছবি তোলার হিড়িক পড়ে যায়। 

উপজেলা সোনারগাঁয়ে পিরোজপুর ইউনিয়নের ভাটিবন্দর এলাকায় মেঘনা নদীর তীরে গেলে দেখতে পাবেন কাশফুলের রাজত্ব। নদী ধরে ভেতরের দিকে যত যাবেন, ততই মুগ্ধ হবেন। মেঘনা নদী থেকে ভাটিবন্দরের দু'পাশে কাশফুলগুলো মাথা নুয়ে আপনাকে স্বাগত জানাবে। বালুর মধ্যে গুচ্ছ গুচ্ছ কাশফুল দেখে মনে হবে, প্রকৃতি আপনার মনের প্রশান্তির জন্য এ রূপে সেজেছে। শেষ প্রান্তের দুদিকে সাজানো কাশফুল দেখে মনে হবে, যেন আপনি দাঁড়িয়ে আছেন কাশফুলের রাজ্যে। যত দূর চোখ যায়, তত দূর কাশের শুভ্রতা।

এই শেষ নয়, একদিকে যেমন বন, আরেকদিকে আছে ধূ ধূ বালুচর। সারা চর জুড়ে কতো না রঙের ফুল। আর একটু দূরেই মেঘনা নদীর ঢেউয়ের গর্জন। বাঁধসংলগ্ন এক কোণে দাঁড়ালেই মেঘনা নদীর বিরামহীন সৌন্দর্য। সূর্যাস্তের সময় সাগর আর নদীতে গোধূলির লাল, একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকার মতো। যে কেউই এর অপার সৌর্ন্দযে নীরব সাক্ষী হতে চাইবে।  

নারায়ণগঞ্জ মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লামিয়া ইসলাম বলেন, মেঘনা নদীর চরের কাশবন অনেক সুন্দর। দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। চারপাশে কাশফুল, কোনও কূল-কিনারা নেই। সব মিলিয়ে চমৎকার দৃশ্য।

এদিকে, কাশফুল শুকিয়ে যাওয়ার পর কাশবনের অংশ কেটে রাখছেন স্থানীয় কৃষকরা। ইতোমধ্যে ছোট-বড় ট্রলার নিয়ে কাশ সংগ্রহ শুরু হয়েছে। চরাঞ্চলের মানুষের রান্না-বান্নার জ্বালানি হিসেবে এগুলোর কদর আছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক ও পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার  মাসুদুর রহমান মাসুম বলেন, মেঘনা নদীর পাড়ে শরতের কাশবন মাসের পর মাস বেশি সময় ধরে দেখা যায়। এখানে মৌসুমি পর্যটন কেন্দ্র করা যেতে পারে। নৌযান ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ পর্যটন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধান থাকলে মেঘনার চর হয়ে উঠতে পারে ব্যতিক্রম বিনোদন কেন্দ্র।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম বলেন, পিরোজপুর ইউনিয়নের ভাটিবন্দর মেঘনা নদীর পাড় একটি সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা। আমরা চাই এ অঞ্চলের ব্যাপারে দেশ-বিদেশের পর্যটনপ্রেমিদের আগ্রহ বাড়ুক। 

বিডি প্রতিদিন / অন্তরা কবির 



এই পাতার আরো খবর