ঢাকা, বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

জীবন সংগ্রামে সফল বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল ইসলাম
বাগেরহাট প্রতিনিধি
নিজের গরুর খামারে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল ইসলাম খোকন।

জীবন সংগ্রামে একজন সফল মানুষ বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল ইসলাম খোকন (৬৪)। নিজের উদ্যোগে এলাকায় গড়ে তুলেছেন শিক্ষা ও সামাজিক বহু প্রতিষ্ঠান। একজন সফল উদ্যোক্তা ও খামারি তিনি। ১৯৮৭ সালে বিআরডিবি অফিস থেকে মাত্র ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে নিজের ৫০ শতকের একটি পুকুরে শুরু করেন মাছ চাষ। এরপর থেকেই তার সামনে এগিয়ে চলা শুরু।

এতে তিনি সফল হওয়ায় পরে বাণিজ্যিকভাবে ৩ একর ৬৬ শতক জমিতে বিশাল মাছের খামার গড়ে তোলেন। প্রতিবছর তিনি এই মাছের খামার থেকে সব খরচ বাদে আয় করেন সাড়ে তিন লাখ থেকে চার লাখ টাকা। তার দেখাদেখি এলাকার বহু বেকার যুবক মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন।

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা খোন্তাকাটা ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল হক হাওলাদার ও কোহিনূর বেগমের ছেলে সাইফুল ইসলাম খোকন। লেখাপড়া করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে।

সফল চাষি ও একজন সফল উদ্যোক্তা খোকন জানান, মাছ চাষে লাভবান হওয়ার পর থেকে আরও ভিন্ন কিছু করার চিন্তা আসে মাথায়। ২০০৭ সালে পাঁচটি গাভি নিয়ে একটি খামার গড়ে তোলেন। দেড় লাখ টাকা দিয়ে শুরু করা সেই খামারে এখন উন্নতজাতের ১২টি দুগ্ধজাত গাভি রয়েছে। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন ১০০ কেজি দুধ বিক্রি হয়। তার এই খামারে চারজন যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে।

উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিস থেকে নিবন্ধিত এই খামার থেকে এখন বছরে আয় আসে প্রায় ১৬ লাখ টাকা। ২০১১ সালে নিজ উদ্যোগে যুব উন্নয়ন অফিসের সহযোগিতায় খোন্তাকাটায় হাওলাদার স’ ও রাইস অ্যান্ড ফ্লাওয়ার মিলস এবং দুটি করাত কল স্থাপন করেন তিনি। এতে এলাকার সাতটি দরিদ্র পরিবারের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। এছাড়া ২০১৭ সালে সমুদ্রগামী দুটি ফিশিং ট্রলার তৈরি করেন। তার এই ট্রলার দুটি সাগরে নিয়মিত ইলিশ আহরণ করছে। এতে ৩৬ জন জেলে শ্রমিক কাজ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছেন।

২০১৮ সালে দেড় লাখ টাকা খচর করে বাড়িতে একটি মুরগির খামার করেন তিনি। বর্তমানে খামারে ১২০০ মুরগি রয়েছে। এখানেও চারজন দরিদ্র মানুষ কাজ করেন। এই খামারের মুরগি ও ডিম বিক্রি করে সব খরচ মিটিয়ে বছরে প্রায় তিন লাখ টাকা আয় হয় তার।

সফল উদ্যোক্তা সাইফুল ইসলাম খোকন বলেন, আমার বীর মুক্তিযোদ্ধার বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল হক কৃষি প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট, মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল হক ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট, মায়ের নামে কোহিনূর হক মহিলা কারিগরি অ্যান্ড বিএম কলেজ, আল কারিম হাফিজিয়া কওমী মাদরাসা, দারুল কোরআন মুন্সী আব্দুল কাসেম (রা.) মাদরাসা, তালতলি কমিউনিটি ক্লিনিক এবং তালতলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে বহু শিক্ষিত বেকার যুবকের চাকরি হয়েছে। পাশাপাশি যুগোপযোগী শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন এলাকার সাধারণ পরিবারের মানুষ। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত সমাজের কল্যাণে কাজ করে যেতে চান সংগ্রামী সাইফুল ইসলাম।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর