ঢাকা, বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

অসহায় শিক্ষার্থীদের পাশে তারা
নাটোর প্রতিনিধি

সাদী মোহাম্মদ তামিম একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী। ২০১৬ সালে সামাজিক কাজে জড়িত হওয়ার জন্য গড়ে তোলেন ‘সিংড়া স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’। ১৫০০ টাকা দিয়ে এক শিক্ষার্থীর বই কিনে দেওয়ার মাধ্যমে শুরু করেন সংগঠনের কাজ। পরে অনেকেই যুক্ত হোন সংগঠনের সঙ্গে। বর্তমানে সংগঠনের মোট সদস্য সংখ্যা ১০০ জন। শুরুতে স্কুল-কলেজ পড়ুয়াকে নিয়ে কাজ করলেও বর্তমানে নানা ধরনের কার্যক্রম করে থাকে সংগঠনটি।

২০১৭ সালে নাটোরের সিংড়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে পায়ে হেঁটে মাদকের বিরুদ্ধে প্রচারণা ও জনসচেতনতা তৈরি করেন সংগঠনের সদস্যরা। মাদক ও ভেজাল খাদ্যের কুফল সম্পর্কে আলোচনা, প্রচার-প্রচারণা চালানোর মধ্যে দিয়ে সবার নজরে আসে সংগঠনটি। এ পর্যন্ত প্রায় ৪০০০ শিক্ষার্থীকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছে তামিমের সংগঠন। তাদের মাদকবিরোধী ভূমিকায় ২৮ জন মাদকাসক্ত ব্যক্তি দেখেছেন আলোর মুখ।

এছাড়াও সংগঠনটি মুমূর্ষু ও অসহায় রোগীদের বিনামূল্যে রক্তদান করে থাকে। এমনকি রক্তদাতার যাতায়াত খরচ পর্যন্ত দেওয়া হয় সংগঠন থেকে।

সংগঠন সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর ঈদের আগে সুবিধাবঞ্চিত শিশু-কিশোরদের নতুন জামা কাপড় কিনে দেওয়া হয়।উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে ঘুরে গরিব ও অসহায় ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা-সামগ্রী দিয়ে সহায়তা করে সংগঠনটি। এর পাশাপাশি মেধাবী গরিব শিক্ষার্থীদের সংগঠনের মাধ্যমে প্রাইভেট পড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়াও উপজেলার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকম সহায়তা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের থাকা খাওয়া এবং যাতায়াতের ব্যবস্থা করে থাকে সংগঠনটি।

এছাড়াও করোনায় প্রায় ৪০ হাজার মাস্ক বিতরণ করেছে তামিমের সংগঠন। স্কুলে স্কুলে গিয়ে মাস্ক এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রদান করেছে। একটি গ্রন্থাগার খুলেছে। সেখান থেকে সবাই বিনামূল্যে বই নিয়ে পড়তে পারে। উপজেলার ৭/৮ জায়গায় বই রাখা আছে। সেখান থেকে মানুষ প্রতিদিন বই পড়ে থাকে।

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সাদী মোহাম্মাদ তামিম বলেন, ‘কলেজে পড়ার সময় বুঝতে পারলাম আশেপাশের অনেক বন্ধুই অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা করছেন। বই কেনার টাকা নেই বলে অনেকেই অন্যের ধার করা বই পড়েন। আবার অনেকেই কলেজে ভর্তির ফি কমানোর জন্য শিক্ষকদের পেছনে ঘোরাঘুরি করেন। আবার ভর্তির জন্য অনেকেই সঠিক দিক নির্দেশনাটুকুও পায় না। কেউ কেউ টাকার অভাবে প্রাইভেট পড়তে পারে না। এসব দেখে মনে হলো, আমরা যারা একটু মধ্যবিত্ত তারা যদি এক হয়ে ওই বন্ধুদের জন্য কিছু করতে পারি তাহলে হয়তো সমাজের উন্নয়ন ঘটবে।’

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা



এই পাতার আরো খবর