ঢাকা, বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

সখীপুরে ৪২ প্রজাতির ১০ লক্ষাধিক বৃক্ষ রোপণ
বনে ফিরবে বন্যপ্রাণিরা, সবুজে সবুজে সাজবে জীবন
সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
ছবি- বাংলাদেশ প্রতিদিন।

টাঙ্গাইলের সখীপুরে বনের ভেতর ফাঁকা জায়গায় ৪২ প্রজাতির দেশীয় ফলদ, বনজ এবং ওষধি বৃক্ষ রোপণ করেছে স্থানীয় বন বিভাগ। এতে বিলুপ্ত হওয়ার পথে নানা রকমের বন্য প্রাণিগুলো আবার বনে ফিরবে বলে মনে করছে প্রাণি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। 

পরিবেশবিদরা মনে করছে, এই এলাকার লালমাটি আর শালগজারি গাছে আচ্ছাদিত সবুজের ভেতর জন্মাবে আরও সবুজ। টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের আওতায় এ উপজেলার ৭২০ হেক্টর জমিতে দশ লাখ আশি হাজার বৃক্ষ লাগানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা বন কর্মকর্তারা। 

উপজেলার বেলতলী এলাকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শালগজারি বনের ভেতরে ফাঁকা জায়গাগুলোতে বেড়ে উঠছে আমলকি, অর্জুন, বহেড়া, হরিতকি, বাসক, নিম, লটকন, জাফরান, গর্জন, চাপালিশ, গাদিলা, পিতরাজ, সোনালু, কাঞ্চন, জলপাই, মহুয়া, কাঠবাদাম, গামার, কাজু বাদাম, শিমুল, ছাতিয়া, বেল, তেঁতুল ইত্যাদি প্রজাতির বৃক্ষ। এভাবে হতেয়া রেঞ্জের কালমেঘা, কড়ইচালা, হতেয়া, কালিদাস, বহেড়াতৈলী রেঞ্জের এমএমচালা, কাকড়াজান, ডিবি গজারিয়া, বহেড়াতৈলী, বাঁশতৈল রেঞ্জের নলুয়া, পাথরঘাটা ও বংশীনগর বিট এলাকায় পৃথক ভাবে এই বৃক্ষগুলো লাগানোর দৃশ্য চোখে পড়ে।

কালমেঘা বিট কর্মকর্তা মো. মোতালেব মিয়া বলেন, অনেক আগে থেকেই এই দেশীয় প্রজাতির গাছগুলো বনের মধ্যেই ছিলো যা এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। বনের সহায়ক হিসেবে ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য পুনরায় এই দেশীয় প্রজাতির গাছগুলো লাগাচ্ছে বন বিভাগ। আমার কালমেঘা বিট এলাকায় ১৪০ হেক্টর জমিতে এই গাছ গুলো লাগানো হয়েছে। যা রক্ষানাবেক্ষনের জন্য প্রতিদিন ছুটে আসি বনের ভেতরে। 

ওই এলাকার মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, একসময় এই বেলতলী জঙ্গলে বাঘ ও হরিন থাকতো। কালের বির্বতনে তা হারিয়ে গেলেও এখনো এই বনের ভেতরে বানর, বেজি, বাঘডাসা, হনু বিড়াল, কাঠ বিড়াল, শিয়াল এবং চিল, শকুন, ঘুঘুসহ নাম নাজানা অনেক পশু পাখি আছে এছাড়া দীর্ঘদিনের পুরাতন গুই সাপ, দাঁড়াশ, শঙ্খচুড় বা রাজগোখরা, শাকিনী সাপসহ নানা প্রজাতির সাপ দেখতে পাই। তারা খাবার না পেয়ে মাঝেমধ্যে লোকালয়ে চলে আসে।

বহেড়াতৈলী রেঞ্জকর্মকর্তা মো, এরাশাদুল আলম বলেন, এই দেশীয় প্রজতির গাছ গুলো বনের সহায়ক গাছ হিসেবে রোপন করা হয়েছে। এগুলো বড় হলে বন্য পশু পাখি গুলো বন থেকে খাবার সংগ্রহ করবে তাই তারা আর লোকালয়ে আসবেনা।

টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামান বলেন, পবিবেশ ভারসাম্য হারালে জীববৈচিত্রের উপর ব্যপক প্রভাব পড়ে। আমাদের বেঁচে থাকতে হলে পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। এছাড়া বর্তমান সরকার আমাদের দেশীয় প্রজাতির গাছ গুলো বাঁচিয়ে রাখতে এই সুফল প্রকল্প হাতে নিয়েছে। টাঙ্গাইলের সখীপুর সেই প্রকল্পের আওতায় গত দুই বছরে ৭২০ হেক্টর জমিতে চারা লাগানো হয়েছে এবং আগামী বছর লাগানো হবে।  

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ



এই পাতার আরো খবর