ঢাকা, বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

বর্ষবরণে মগ্ন পাহাড়
ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

পাহাড়ের বুকে সূর্যালোক। ভরা পূর্ণিমা রাতে হ্রদের পানিতে মৃদু ঢেউ। জোছনার ঝলকানি। আর গিরি নির্ঝর ঝর্ণার রূপমাধুরী দেখতে পর্যটকদের ভিড় ছিল পাহাড়ে। রাঙামাটির সাজেক পাহাড়ের দাঁড়িয়ে বছরের শেষ গোধূলী স্নানে মুগ্ধ হতে ভিড় করেছেন পর্যটকরা।

শুধু কি তাই! শীতের উঞ্চতা গায়ে মেখে পাহাড়ের বুক চিরে উড়ে বেড়ানো শুভ্র মেঘে ভেসে গেছে কেউ কেউ। তাই তো শহরের ব্যস্ততা, রুটিনবাঁধা জীবন আর কোলাহল ছেড়ে পাহাড়, সবুজ আর মেঘের রাজ্যে একসঙ্গে ঘুরতে পরিবার-পরিজন হাজির হয়েছে দেশি-বিদেশি হাজারো পর্যটক।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮শ’ ফুট উচ্চতায় রাঙামাটি সাজেক ইউনিয়ন। সাজেক পাহাড়ে দাঁড়িয়ে হাত বাড়ালে ছোঁয়া যায় মেঘ। সাজেক পাহাড় থেকে দেখা যায় অপরূপ সৌন্দর্যে ভরপুর পাবর্ত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি জেলা। এখানে রয়েছে পাহাড়ের পর পাহাড়। গিরিখাদ, আঁকা-বাঁকা ছোট নদী। প্রকৃতি এখানে নিজেকে উজার করে দিয়েছে। শীত-গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা রূপের জৌলুস থাকে সারা বছরই। পার্থক্য কেবল ঋতুর সাজে। এখানে চলে পাহাড়, নদী আর হ্রদের মিলন মেলা। এখানকার প্রতিটি পরতে পরতে লুকিয়ে আছে অদেখা ভুবন। তাই তো পর্যটকদের ঘুরে বেড়ানোর তালিকায় প্রথমস্থান সাজেক বলছে পর্যটকরাই। 

কথা হয় সাজেক বেড়াতে আসা পর্যটক সালমা রহমানের সাথে। তিনি বলেন, রাঙামাটি নামটা যেমন সুন্দর, তেমনি সুন্দর প্রকৃতি। তাই প্রতিবছর নিয়ম করে বছরের ঠিক শেষ সময়টাই রাঙামাটি আসা হয়। এখন সাজেক আরও বেশি প্রিয়। বছরের শেষে সূর্যস্নান করার অনুভূতিটাই আলাদা।

একই কথা জানালো আরেক পর্যটক তানভির আজাদ। তিনি বলেন, আকাশের মেঘ যেন উড়ে উড়ে এসে বসেছে পাহাড়ের কোলে। সকালে ঘুম থেকে উঠে চোখ খুললেই দেখেছি মেঘের চাদরে ঢাকা সাজেক। তবে শুধু সকাল নয়, সন্ধ্যায় মেঘের লুকোচুরি, যা সাজেকের সবচেয়ে অন্যতম আকর্ষণ। চোখ সামনে দেখা মেঘ আর রংয়ের মিতালী। আর সর্বোচ্চ চূড়া থেকে নিচে দূরের গ্রামগুলোর দিকে তাকালে মনে হবে পটে আঁকা ছবি। সত্যি অসাধারণ।

এদিকে পর্যটক সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে সাজেকের হোটেল মোটেল মালিকরা। লাখো পর্যটকের অরণ্য এখন রাঙামাটির সাজেক ভ্যালি। সাজেক বাঘাইহাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মেঘালয় রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী মো. জুয়েল বলেন, বছরের ঠিক এ সময়টা পর্যটকদের সামাল দিতে অনেকটা কষ্ট হয়। এতোটাই ভিড় থাকে । থাকার জায়গা দিতে পারি না। তবে আমাদের ভাল লাগছে দেশে বিদেশে সাজেক এখন মানুষের কাছে অনেক জনপ্রিয়। 

শুক্র-শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি আর বছরের শেষ দিন হওয়ায় সাজেকে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় জমেছে।

সাজেকের রিসোর্ট ও কটেজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জুমঘর কটেজের মালিক জেরী লুসাই বলেন, বর্তমানে সাজেকের রিসোর্ট ও কটেজগুলোর ধারণক্ষমতার চেয়ে ৫ থেকে ৬ গুণ পর্যটক অবস্থান করছেন। আমরা তাদের রুম দিতে পারছি না। তাই অনেক পর্যটক ফিরে যাচ্ছে। বাইরে তাবুতেও জায়গা হচ্ছে না। সবচেয়ে বেশি জট বেধেছে পর্যটকদের গাড়ির বহর। তবুও চেষ্টা করছি বছরের শেষ সময়টা পর্যটকদের ভালো কাটুক।

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর