পাখির কলতানে মুখর পাহাড়। কিচির-মিচির ছন্দের তালে ঝাঁক বেঁধে চলে সারাদিন ওড়াওড়ি। হ্রদ-পাহাড়ে পাখিদের এমন খুনসুটি দেখে মুগ্ধ স্থানীয় ও পর্যটকরা। পার্বত্যাঞ্চলে নানা প্রজাতির রঙ-বেরঙয়ের পাখি প্রায় প্রতিদিন আসছে শীত প্রধান দেশগুলো থেকে। সবুজ পাহাড়, বন-জঙ্গল আর বাঁশ ঝাড়ের অস্থায়ী নীড়ে ঠাঁই হয়েছে এসব পাখিদের।
ভোরের আবছা কুয়াশার বুক চিরে কাপ্তাই হ্রদের ডুবো চরে বসে দেশি-বিদেশি পাখিদের মিলন মেলা। হ্রদের স্বচ্ছ জল আর হিমশীতল হাওয়ায় অতিথি পাখিদের আনন্দ মিলে সামিল হয় স্থানীয় পাখিরাও। কখনো হ্রদের বুকে ডুব সাঁতার। কখনো আবার ঝাঁক বেঁধে আকাশের নীলে ওড়াওড়ি এমন দৃশ্য দেখতে রাঙামাটিতে ভিড় জমছে পর্যটকদেরও। ঠিক সন্ধ্যা নামার মুখে পাহাড়ে বুকজুড়ে যখন ছড়িয়ে পড়ে গোধূলির সোনালি রঙ। তখনই ব্যস্ততা শুরু হয় পাখিদের। ঝাঁকে ঝাঁকে ফিরে যায় গহিন অরণ্যের অস্থায়ী নীড়ে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান জানান, প্রতিবছর উত্তরের শীত প্রধান সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া ও নেপাল থেকে হাজার হাজার অতিথি পাখি এদেশে আসে। এ সময় সাইবেরিয়া ও হিমালয়ের উত্তরে শুরু হয় প্রচণ্ড শীত ও তুষারপাত। তাই ওখানে পাখিরা থাকতে পারে না। নিজেদের বাঁচাতে এরা ডানায় ভর করে হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশসহ সংলগ্ন নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে চলে আসে। দেশের হাতেগোনা যে কয়েকটি এলাকায় এরা ক্ষণস্থায়ী আবাস গড়ে, তার মধ্যে অন্যতম পার্বত্যাঞ্চল। তিনি আরও বলেন, মূলত অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বরের প্রথম দিকেই রাঙামাটি ডিসি বাংলোর গাছগুলোতে তাদের আসতে দেখা যায়। আবার মার্চের শেষদিকে আবার ফিরে যায় আপন ঠিকানায়। এরা আমাদের দেশের অতিথি। তাদের নিরাপত্তা দেওয়া সবার দায়িত্ব কর্তব্য।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল