ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

মদনে নৌকা ডুবির তিন বছর
এখনো নেত্রকোনার হাওরে ঝুঁকি নিয়ে চলছে মানুষ
নেত্রকোনা প্রতিনিধি

নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে চলাচলের একমাত্র বাহন নৌযান। বছরের পর বছর হাওরের মানুষেরা এই জলবাহনে চলেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। ফলে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, নেত্রকোনার কয়েকটি উপজেলার সিংহভাগ এলাকা নিয়ে হাওর। বর্ষা মৌসুমে চারিদিকে থাকে অথৈ পানি। এসব এলাকার একমাত্র চলাচলের মাধ্যম হচ্ছে নৌযান। শিশু বৃদ্ধ নারী সকলেই অভ্যস্ত থাকলেও প্রায়ই নৌকা ডুবে প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর মূল কারণ হচ্ছে চালকদের অদক্ষতা এবং ফিটনেসবিহীন নৌকা। সেই সাথে রয়েছে যাত্রী ও পর্যটকদের মধ্যে ব্যাপক অসচেতনতা।

২০২০ সালে ৫ আগস্ট ময়মনসিংহ থেকে একটি মাদ্রাসার প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী ও শিক্ষক এসেছিলেন মদনের উচিৎপুর হাওরে। কিন্তু বৈরি আবহাওয়া এবং চালকের অধিক মুনাফার লোভে ট্রলার দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মারা যান ১৮ জন। এরপর সেই ঘটনায় প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি নৌ পুলিশের টহলসহ নৌকা গুলোতে লাইফ জ্যাকেট এবং ফিটনেস বিহীন নৌকা নিষেধসহ বেশ কিছু সুপারিশ দিলেও মানছে না কেউই।

পরের বছর একই মাসের ১১ তারিখ কলমাকান্দা উপজেলার গুমাই নদীতে ১১ জন, এ বছর ৭ জুলাই পূর্বধলার কংশ নদে ৩ জন নৌকা ডুবে মারা যান। এছাড়াও প্রায়ই নৌকা ডুবিতে নিহতের খবর পাওয়া যায়। কিন্তু দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ চোখে পড়ে না বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় বাসিন্দা পরিতোষ দাস ও ফয়েজ আহমেদ হৃদয় বলেন, নৌকার মাঝিরা ফিটনেস বিহীন নৌকা যেমন চালায় তেমন জনসাধারণের মধ্যেও সচেতনতা নেই। ট্রলার ডুবির পরপর তদন্ত কমিটি গঠন করে তারা চালকসহ ইজারাদারদেরকে বাঁচিয়ে দিয়ে বৈরি আবহাওয়াকে দোষ দিয়েছে। কিন্তু সেখানে কয়েকটি সুপারিশ ছিলো। যেগুলোর কোনটাই বাস্তবায়নের লক্ষ্মণ দেখা যায়নি। নৌ পুলিশ নেই। চলে ফিটনেস বিহীন নৌকা। এমন ঝুঁকিতেই এই হাওরাঞ্চলের মানুষ।

জানা গেছে, এ বছর ২৬ লাখ ৫০ হাজার টাকায় উচিৎপুর ঘাটটি ইজারা দেয় প্রশাসন। প্রতিদিন প্রায় ৫০ থেকে ৬০ টি নৌকা চলে বিভিন্ন এলাকায়।

মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত ) মো: শাহনূর রহমান জানান, এ ব্যাপারে তারা ইজারাদার ও নৌকা চালকদের প্রতিনিয়ত সচেতন করে যাচ্ছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মদন খালিয়াজুরী উপজেলা সার্কেল) রবিউল ইসলাম বলেন, আমরা সব সময় সচেতন করছি। সেইসাথে নিরাপত্তার জন্য দিনে রাতে টহল থাকে পুলিশের। এছাড়াও লাইফ জ্যাকেট ও ফিটনেস বিহীন কোন জলযান নজরে পড়লেই ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর