ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

তাপমাত্রা বেড়েছে সমুদ্রপৃষ্ঠে, ঝুঁকির মুখে সামুদ্রিক প্রাণীর বাস্তুসংস্থান
অনলাইন ডেস্ক

বৈশ্বিক জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষায় সমুদ্রের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মোট অক্সিজেনের অর্ধেকই আসে এখান থেকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সমুদ্রপৃষ্ঠে তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় ঝুঁকির মুখে পড়েছে সামুদ্রিক প্রাণীর বাস্তুসংস্থান।

অপরদিকে, বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বৈশ্বিক জলবায়ুর ক্ষেত্রেও।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন সংস্থা ন্যাশনাল ওশনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফোরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন  জানিয়েছে, বর্তমানে পৃথিবীর সমুদ্রগুলোর গড় তাপমাত্রা ২০ দশমিক ৯৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে অন্তত ৩ থেকে ৫ ডিগ্রি বেশি।

বাড়তে থাকা এই তাপমাত্রা সামুদ্রিক মাছ সহ অন্যান্য প্রাণীর প্রজননের ক্ষেত্রে হতে পারে বড় হুমকি। 

যুক্তরাজ্যের সমুদ্র গবেষণা কেন্দ্র বলছে, মানবসৃষ্ট দূষণ ও অতিরিক্ত মাছ শিকারের ফলে সমুদ্রের খাদ্যচক্র পড়েছে বিপর্যয়ের মুখে। 

গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার আটলান্টিক উপকূলে পানির তাপ বৃদ্ধির কারণে ধ্বংস হচ্ছে প্রবাল প্রাচীর। 

ইয়েল ক্লাইমেট কানেকশনসের আবহাওয়াবিদ জেফ মাস্টার্স বলেন, বর্তমানে ফ্লোরিডার কিছু এলাকায় সমুদ্রের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০১ দশমিক ১ ডিগ্রি ফারেনহাইট। এবার যে তাপমাত্রা দেখছি তা অকল্পনীয়। এভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠ উত্তপ্ত থাকায় অন্য প্রাণীর পাশাপাশি ক্ষতি হচ্ছে প্রবাল প্রাচীরের। 

সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো, বনাঞ্চল ধ্বংস করা, অতিরিক্ত মাছি শিকারকে অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন পরিবেশবিদরা। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে সাগর, মহাসাগর ও উপসাগরগুলোর তাপ ও গ্রিনহাউজ গ্যাস শোষণের ক্ষমতা কমবে। 

যা মেরু ও শীতপ্রধান অঞ্চলগুলোর হিমবাহ ও জমাট বরফের স্তর দ্রুত গলিয়ে ফেলবে। এর প্রভাবে বাড়বে সমুদ্র পৃষ্ঠার উচ্চতা ও পানির নিচে তলিয়ে যাবে বহু অঞ্চল বলছেন বিশেষজ্ঞরা। 

ন্যাশনাল ওশোনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফোরিক অ্যাডমিনিস্টেশনের কর্মকর্তা ও মার্কিন জলবায়ুবিদ ড. ক্যাথরিন লিসেনস্কি বলেন, ‘উষ্ণ ও নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের সমুদ্রের কথা যদি বাদও দেওয়া যায়…।কেবল যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সাগর-মহাসগারের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বর্তমানে এতটাই বেশি যে, আপনি ঝাঁপ দিলে মনে হবে-আরামদায়ক একটি উষ্ণ বাথটাবের পানিতে আপনি স্নান করছেন।’

‘কিন্তু মানুষের জন্য আরামদায়ক হলেও সামুদ্রিক প্রাণীদের জন্য এই তাপমাত্রা রীতিমতো বিপর্যয়কর। ফ্লোরিডার আটলান্টিক উপকূলের অগভীর পানিতে একসময় সুবিশাল প্রবাল প্রাচীর ছিল। কিন্তু গত কয়েক বছরে অধিকাংশ প্রবাল ধ্বংস হয়ে গেছে কেবল সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপ বৃদ্ধির কারণে।’

বর্তমানে আমরা সমুদ্রের ওপর যে পরিমাণ চাপ সৃষ্টি করেছি, মানব ইতিহাসের কোনো পর্যায়েই এম পরিস্থিতি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্যের সমুদ্র গবেষণা কেন্দ্র প্লেমাউথ মেরিন ল্যাবের কর্মকর্তা ও জলবায়ুবিদ ড. ম্যাট ফ্রস্ট।

সূত্র : ডয়চে ভেলে।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত



এই পাতার আরো খবর