ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

সাগরের বুকে জেগে উঠেছে কুতুবদিয়া মায়া দ্বীপ
মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, কুতুবদিয়া
সাগরের বুকে জেগে উঠেছে কুতুবদিয়া মায়া দ্বীপ

কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার পশ্চিম প্রান্তে বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে উঠেছে একটি দ্বীপ। কুতুবদিয়া থেকে পশ্চিমে এ দ্বীপের দূরত্ব প্রায় ২ কিলোমিটার। দ্বীপটি জোয়ারের সময় ডুবে যায়, ভাটার সময় জেগে উঠে। পড়ন্ত বিকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়টাতে বাস্তবিকপক্ষে এর সৌন্দর্য অবলোকনের সময়। মাতৃগর্ভ হতে একটি শিশু যেমন প্রচণ্ড মায়া নিয়ে জন্ম নেয় এ দ্বীপটির ক্ষেত্রেও তাই ঘটে। শেষ বিকালে দ্বীপটি যখন জেগে উঠে এবং উপর দিকে পড়ে মিষ্টি একটা রোদ, যা এক স্বর্গীয় মায়াবী আবেগ সৃষ্টি করে দ্বীপটিজুড়ে। 

স্থানীয়দের মতে, এটি বিভিন্ন নামে পরিচিত হলেও ২০১৮ সালে তৎকালীন নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বর্তমান ফেনী জেলার অতিরিক্ত প্রশাসক সুজন চৌধুরী নেতৃত্বে কুতুবদিয়া কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক দুলাল কান্তি বড়ুয়ার আয়োজনে উপজেলার বিভিন্ন দফতরের সরকারি কর্মকর্তারা এ চর পরিদর্শন করেন। এসময় উপজেলা মৎস্য অধিদফতরের কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ এ চরের নাম “মায়া দ্বীপ” প্রস্তাব রাখেন। 

অনেকে আরও কিছু নাম প্রস্তাব দিলেও বৈঠকের শেষ আলোচনায় সবার মতামতের ভিত্তিতে এ চরের নামকরণ করা হয় “মায়া দ্বীপ”। সেই থেকে এ নামটি পরিচিতি পায়। এ দ্বীপে সাগরের ফেনিল পর পর অনেক ঢেউ আছড়ে পড়া ও পানির সঙ্গে বুদ বুদ করে বের হওয়া গ্যাসে জলন্ত কাটি থেকে আগুনের অপূর্ব দৃশ্য কাউকে আলোড়িত না করে পারে না। বড়ঘোপ সমুদ্র সৈকত হতে নৌকায় পড়ন্ত বিকালে স্থানীয় যুবকরা ফুটবল খেলতে যায়।

কুতুবদিয়া খেলোয়াড় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো.রশিদ বাদশা বলেন, শীত মৌসুমে বিকালের দিকে তারা দল বেঁধে নৌকায় চড়ে মায়া দ্বীপে ফুটবল খেলতে যায়। উপযুক্ত মাঠ ও পরিবেশের কারণে ফুটবল খেলোয়াড়দের জন্য আরেকটি নতুন উপহার এ দ্বীপ। এই দ্বীপে ফুটবল খেলতে অনেক ভালো লাগে আমাদের। যখন শীত মৌসুম আসে তখন দ্বীপটির কারণে কোনও নৌকা কিংবা জাহাজে ওই পাশ দিয়ে যাওয়া যায় না।

স্থানীয় জেলে ফরিদ আলম, গিয়াস উদ্দিন, মানিকসহ অনেকেই বলেন, সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া-আসার পথে নৌকাটি দক্ষিণ পাশ দিয়ে চালাতে হয়। কিন্তু তাদের একটু কষ্ট হলেও এ দ্বীপটি প্রকৃতির দুর্যোগ থেকে কুতুবদিয়াকে রক্ষা করে বলে জানান তারা।

সাবেক ইউএনও সুজন চৌধুরীর সফর সঙ্গী কক্সবাজার জেলা আঞ্চলিক পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক কর্মকর্তা সুপানন্দ বড়ুয়া বলেছেন, কুতুবদিয়ার পশ্চিম প্রান্তে বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে উঠছে বিশাল চর। পরবর্তীতে  “মায়া দ্বীপ” নামে পরিচিত হয় এটি। এর কারণে কুতুবদিয়া দ্বীপটি সাগরের ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা হচ্ছে। মায়া দ্বীপকে নিয়ে সরকারিভাবে একটু চিন্তা ভাবনা করলেই বড় ধরনের সুফল পাওয়া যাবে বলে মনে করেন তিনি।

বিডি প্রতিদিন/কালাম



এই পাতার আরো খবর