ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

কোটালীপাড়ায় বিশ্বকর্মা পূজা উপলক্ষে নৌকাবাইচ
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় আনন্দমূখর পরিবেশের মধ্যে দিয়ে বিশ্বকর্মা পূজা উপলক্ষে নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

আজ সোমবার বিকেলে উপজেলার কালিগঞ্জ নদীতে নান্দনিক এই নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়। প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্যে লালিত আকর্ষনীয় এ নৌকা বাইচে গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, পিরোজপুর, নড়াইল, বরিশাল জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের শতাধিক সরেঙ্গা, ছিপ, কোষা বাছারী নৌকা অংশ নেয়। 

আবহমান গ্রাম বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও নিজস্বতা ধরে রাখতে হাজার প্রাণের আনন্দ উচ্ছ্বলতায় কোটালীপাড়ার কালিগঞ্জের বাবুর খালে কালিগঞ্জ বাজার থেকে খেজুরবাড়ি পর্যন্ত ২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়। বাড়তি আকর্ষণ ছিল নৌকায় নৌকায় মেলা। 

নৌকায় ও ট্রলারে করে নৌকাবাইচ দেখতে নারীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে উৎসবের আমেজে সন্ধ্যায় এ নৌকাবাইচ শেষ হয়। 

এ দিন দুপুর থেকে নানা বর্ণে ও বিচিত্র সাজে সজ্জিত দৃষ্টি নন্দন এসব নৌকা বাইচ শুরু করে। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে একের পর এক কুচ বা ছোপ। ঠিকারী , কাশির বাদ্যে ও তালে জারি সারি গান গেয়ে এবং নেচে - হেঁইও হেঁইও রবে বৈঠার ছলাৎ- ছলাৎ শব্দে এক অনবদ্য আবহ সৃষ্টি হয়। দু’কূলে দাঁড়িয়ে থাকা হাজার হাজার মানুষের হৃদয়ে জাগে দোলা। 

হিজলবাড়ি গ্রামের বিনয় বিশ্বাস বলেন, আমাদের এলাকার নৌকাবাইচ কেউ প্রচলন করেননি। প্রায় দু'শ’ বছর আগে বিল এলাকার মানুষ চিত্ত বিনোদনের জন্য নৌকা দিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করতো, এ থেকে এটি প্রচলিত হয়। সে ঐতিহ্য এখনো চলছে। নৌকা বাইচ থেকে এলাকার মানুষ নির্মল আনন্দ উপভোগ করে।

বাচারী নৌকা নিয়ে আসা সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সমর চাঁদ মৃধা খোকন বলেন, প্রায় ৩০ বছর ধরে আমি এখানে বাচারী নৌকা নিয়ে আসি। আগামীতেও আমি এভাবে নৌকা নিয়ে এই বাইচে আসবো। আমার বাবাও এভাবে বাচারী নৌকা নিয়ে এখানে আসতেন। আমার ২টি বাচারী নৌকা রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারী মাসে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন কোটালীপাড়ার ভাঙ্গারহাট এসেছিলেন। তখন তিনি আমার এই নৌকার বাইচ দেখেছিলেন। 

কলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিজন বিশ্বাস বলেন, কোটালীপাড়া উপজেলার কালিগঞ্জে নৌকাবাইচ এখনো বর্ণিল। এ অঞ্চলে বিশ্বকর্মা পূজা উপলক্ষে নৌকাবাইচের মধ্যে দিয়ে মৌসুমের বাইচের সূচনা হয়। এ নৌকা বাইচ কেউ আয়োজন করেন না। মনের খোরাক মেটাতে স্থানীয়রা নৌকা বাইচ দিয়ে থাকেন। এ কারণে এখনো  কোটালীপাড়ায় নৌকা বাইচ স্বগৌরবে টিকে আছে।  প্রতি বছর দূর্গা ও লক্ষ্মীপূজায় কালীগঞ্জসহ কোটালীপাড়ার বিভিন্ন স্থানে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল



এই পাতার আরো খবর