ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

চিনিগুঁড়া ধানের সোনালি প্রতিমা দেখতে উপচে পড়া ভিড়
মনিরুল ইসলাম মনি, সাতক্ষীরা

শারদীয় দুর্গা পূজা আয়োজন এখন শেষ দিকে প্রায়। মাটির কাজ শেষ করে দেবীর গায়ে রং তুলির আঁচড়, সাজসজ্জা সব কিছুই প্রায় সম্পন্ন করেছেন শিল্পীরা। নরম কাঁদা-মাটি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিল তিল করে গড়ে তোলা দেবী দুর্গার প্রতিমায় ভরে উঠেছে সাতক্ষীরার মোট ৬০৬টি মণ্ডপ। তবে সবার নজর কাড়ছে জেলার কলারোয়া উপজেলার সোনালি রঙের চিনিগুঁড়া ধান দিয়ে তৈরি ব্যতিক্রমী প্রতিমা। 

সোনালি রঙের ধান দিয়ে তৈরি প্রতিমাগুলো দেখে মনে হচ্ছে স্বর্ণ দিয়ে মোড়ানো হয়েছে। দুর্গা, কার্তিক, গণেশ, সরস্বতী, লক্ষ্মী অসুরসহ আনুসাঙ্গিক প্রতিটি প্রতিমায় পুঁথির মতো করে ছোট ছোট ধান বসানো হয়েছে। কাঠ, বাঁশ, বিচুলির ফ্রেম বসিয়ে নরম কাঁদা-মাটি শুকিয়ে যাওয়ার পূর্ব মুহূর্তে ধান বসিয়ে তৈরি করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন এই প্রতিমা। এর জন্য ধান লেগেছে ১০০ কেজি। দীর্ঘ এক মাস সময় ধরে নিপুণ হাতে ৪ জন প্রতিমা কারিগর তৈরি করেছেন ১৮টি প্রতিমা। তাই তো পূজা শুরুর আগে থেকেই কলারোয়া মুরারিকাটি পালপাড়া পূজা মণ্ডপে ব্যতিক্রমী এই প্রতিমা দেখতে ভিড় জমাচ্ছে ভক্তবৃন্দসহ দর্শনার্থীরা।

ধানের প্রতিমা তৈরির কারিগর পল্লত বিশ্বাস ও পালপাড়ার কাজল পাল জানান, ইউটিউব দেখে তারা সোনালি রঙের চিনিগুঁড়া ধান দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করেছেন। ৪ জন কারিগর মিলে দীর্ঘ ১ মাস ধরে তৈরি করেছেন ১৮টি প্রতিমা। এতে তাদের খরচ হয়েছে প্রায় লক্ষাধিক টাকা। কাঠ,বাঁশ, বিচুলির ফ্রেম বসিয়ে নরম কাঁদা-মাটি শুকিয়ে যাওয়ার পূর্ব মুহূর্তে ধান বসিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিল তিল করে পুঁথির মতো করে সাজিয়ে  নকশী কাপড় দিয়ে সাজিয়ে তৈরি করেছেন দৃষ্টিনন্দন এই প্রতিমা। কিছু কিছু অংশে রং দিয়ে স্প্রে করার কারণে প্রতিমাগুলো স্বর্ণের রঙে চিক চিক করছে। স্থানীয় যুব কমিটির আয়োজনে সাতক্ষীরা জেলার এই প্রথম ধানের ব্যতক্রমী প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে।  

প্রতিমাগুলো দেখতে বিভিন্ন জেলা থেকে দর্শনার্থীরা কলারোয়া পৌর সদরের মুরারীকাটি পালপাড়ার এই মণ্ডপে ভিড় করছেন।  

সাতক্ষীরা জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ ঘোষ জানান, জেলায় মোট ৬০৬টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধে তালা উপজেলার ১৯৬টি, কলারোয়ায় ৪৮টি, সদর উপজেলার ১১২টি আশাশুনিতে ১০৮টি, দেবহাটায় ২১টি, কালিগঞ্জ উপজেলার ৫১টি ও শ্যামনগর উপজেলার ৭০টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। সব শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে একটা উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। দুর্গোৎসব ঘিরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃংখলা বাহিনীকে কঠোর অবস্থানে থাকার আহবান জানান তিনি।

সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান পিপিএম জানান, সারদীয় দুর্গোৎসব সফল ও সুন্দর ভাবে সম্পন্ন করতে সাতক্ষীরা জেলায় তিন স্থরে পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি আনসার ও গ্রাম পুলিশ মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি সকল ধরনে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রতিটি মণ্ডপ সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। 

২০ অক্টোবর মহাষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে দেবী দুর্গা ঘোড়ায় (ঘোটকে) চড়ে স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোকে আসবেন। ২৫ অক্টোবর দশমীতে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আবারও ঘোড়ায় চরে ফিরে যাবেন স্বর্গলোকে।

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর