ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

হারিয়ে যাচ্ছে ‘ভুবন চিল’
নজরুল মৃধা, রংপুর

কয়েক দশক আগেও গ্রামের হাট থেকে কেউ মাংস কিংবা মাছ কিনে বাড়ি ফেরার পথে হাতে লাঠি রাখতেন। কারণ, কখন চিল ছোঁ মেরে মাংসের পোটলা নিয়ে যাবে এই আতঙ্ক বিরাজ করত হাট ফেরত মানুষের মাঝে। এখন সেই দিনও নেই। নেই চিলও। বিশেষ করে ভুবন প্রজাতির চিল এখন বিপন্নের তালিকায়। ভুবন চিল এখন দেখা পাওয়াই দুষ্কর হয়ে উঠেছে।

জানা গেছে, এক সময় আমাদের দেশে বেশ কয়েক প্রজাতির চিল ছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভুবন চিল, বাদামি চিল, গোদা চিল, ডোম চিল ইত্যাদি। ভুবন চিলের প্রকৃতপক্ষে মোট কতটি উপপ্রজাতি রয়েছে এ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তবে অনেক প্রাণী বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এক সময় ভুবন চিলের মোট সাতটি উপ-প্রজাতি ছিল। সাইবেরিয়ার পূর্বাঞ্চল, জাপান থেকে উত্তর ভারত, উত্তর মায়ানমার এবং চীনের অধিকাংশ অঞ্চল জুড়ে এদের বিস্তৃতি। শীতকালে এদের দক্ষিণ ইরাক, দক্ষিণ ভারত, বাংলাদেশে দেখা যায়।

ভুবন চিল লম্বা চেরা লেজওয়ালা কালচে-বাদামি মাঝারি আকারের শিকারি পাখি। এর দৈর্ঘ্য কমবেশি ৬১ সেন্টিমিটার, ডানা ৪৩ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার।  ঠোঁট ৩ দশমিক ৬ সেন্টিমিটার, পা ৫ দশমিক ২ সেন্টিমিটার ও লেজ ২৬ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। পুরুষ চিলের ওজন ৬৩০-৯৩০ গ্রাম এবং স্ত্রী পাখির ওজন ৭৫০-৯৪০ গ্রাম। স্ত্রী ও পুরুষ পাখির চেহারা অভিন্ন। তবে স্ত্রী পাখি পুরুষ পাখির তুলনায় সামান্য একটু বড় হয়ে থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহ স্পষ্ট গাঢ় লালচে-বাদামি রং থাকে। পিঠও কালচে লাল-বাদামি। ডানার উপরের অংশের মধ্য-ঢাকনি বরাবর ফিকে বাদামি রঙের ফিতা থাকে। ওড়ার সময় এর ডানার নিচের সাদা প্রাথমিক পালকগুলো স্পষ্ট নজরে পড়ে। ঠোঁট কালো। চোখ বাদামি এবং পা ও পায়ের পাতা ফিকে হলুদ। অপ্রাপ্তয়স্ক পাখির মাথা ও পেটে প্রশস্ত সাদাটে কিংবা পীতাভ ডোরা থাকে। এদের দূর থেকে চেনা যায়।

রংপুর বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসার মোশাররফ হোসেন বলেন, ভুবন চিল এক বিপন্ন প্রজাতির একটি পাখি। আবাস ও খাদ্য সংকটের কারণে এই পাখিটি হারিয়ে যেতে বসেছে।

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল 



এই পাতার আরো খবর