ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

হারানোর পথে হলদে-পা হরিয়াল
নজরুল মৃধা, রংপুর

এক সময় ঝাঁক বেঁধে উড়ে বেড়াত হলদে-পা হরিয়াল। আবাসস্থল সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য সংকটসহ নানা কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে এই পাখি। কদাচিৎ দুই-একটি পাখি দেখা গেলেও দলবদ্ধভাবে এখন আর এই পাখি দেখা যায় না। বর্তমানে এই পাখিটি বিপন্নের তালিকায় স্থান করে নিতে বসেছে।

 এই পাখি সম্পর্কে জানা গেছে, এরা সাধারণত লম্বায় ২৫ থেকে ৩৩ সেন্টিমিটার হয়। এদের দেহের ওপরের অংশের রং হালকা ধূসর। ঘাড়ে লালচে ছোপ ও ডানায় সবুজাভ কালোর ওপর হলদে টান রয়েছে। বুকের নিচের অংশ, পেট ও তলপেট ধূসর। কাঁধে এক ফালি হালকা বেগুনি রং। লেজের ওপরের অংশের গোড়ায় জলপাই-হলদে বলয় থাকে। চোখের আইরিশের ভেতরের বলয়টি নীল ও বাইরেরটি গোলাপি। ঠোঁটের রং হালকা সবুজাভ। পা ও পায়ের আঙুল চকচকে হলুদ। এই পাখি ভারতীয় উপমহাদেশের। এটি ভারতের মহারাষ্ট্রের জাতীয় পাখির মর্যাদা পেয়েছে। তবে আমাদের দেশে এদের সংখ্যা খুবই কম। এরা বিভিন্ন ফল জাতীয় খাদ্য ও বাদাম জাতীয় তৈলবীজ খায়। এরা ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে বেড়াতে পছন্দ করে। এদের গাছের  উঁচু ডালে বসে থাকতে দেখা যায়। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি তাদের প্রজনন সময়কাল। গাছের ডালে চিকন কাঠি দিয়ে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে দুটি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৬ থেকে ১৮ দিন। একটা সময় বড়-বড় গাছের ডালে বাসা থেকে এই হলদে-পা হরিয়ালের ডাক শোনা যেত। এই পাখিটির ডাক সুমধুর। তবে খাদ্য অভাবে এই পাখিটি দিন দিন বিলুপ্তির পথে চলে যাচ্ছে।  

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড, তুহিন ওয়াদুদ বলেন, গত সপ্তাহে এই পাখির ছবি তুলেছি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলা থেকে। অনুকূল পারিবেশ না থাকায় হলদে পা হরিয়াল প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। বটগাছ, পাকুড়গাছ, খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় এদের আবাসস্থল কমে গেছে। ফলে এই পাখিটি আগের মত দেখা যায় না।  তিনি বিপন্ন প্রজাতির পাখি রক্ষায় অবাধে বৃক্ষ নিধন না করার আহবান জানান।

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর