অন্যের দেখে বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি কাজ শিখে দীর্ঘদিন ধরে নিজের অভাবী সংসার চালিয়ে ব্যবসায়িক সফলতা পান বীরগঞ্জের আফসার আলী (৫৫)। তবে প্লাস্টিকের বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী বাজারে আসায় এখন কমে গেছে বাঁশের তৈরি পণ্যের চাহিদা। অথচ যখন ৬ বছর তখন তার মা মারা যায়। সংসারের অভাব অনটনে পেটের দায়ে বগুড়ায় মানুষের বাসায় দীর্ঘ ১২ বছর খাবারের বিনিময়ে কাজ করেন তিনি। সেখানেই অন্যের দেখে বাঁশ দিয়ে তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্রের কাজ শেখা তার।
এরপর থেকে আজও বাঁশের পণ্য তৈরি করে বিভিন্ন হাট-বাজার ও গ্রাম অঞ্চলে এইসব পণ্য বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন বীরগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর ইউপির মাটিয়াকুড়া গ্রামের আফসার আলী।
গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে বাঁশ ক্রয় করেন, তা দিয়ে খাঁচা, ঝাঁপি, কুলা, চালন, খেলাধুলার টলি, ডালা, ঝাড়ু, মাটি ঝারার চালন, মাছ ধরার পলইসহ বিভিন্ন প্রকার পণ্য তৈরি করে বিক্রি করেন আফসার আলী।
তিনি জানান, কাজ শেখার পর নিজ গ্রামে চলে আসার পর কয়েকবছর আগে বেশ সফলতায় ব্যবসা পরিচালনা করেছি। কিন্তু প্লাস্টিকের বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী বাজারে আসার কারণে কমে গেছে বাঁশের তৈরি পণ্যের চাহিদা। তারপর বাঁশের পণ্য সামগ্রী দৈনিক ১৫০০-২০০০ টাকার বিক্রি করি। অন্যদিকে প্লাস্টিক পণ্যের দাম বাঁশের তৈরি পণ্যের চেয়ে অনেক কম। আগে ২০০-৩০০ টাকার বাঁশ কিনে সেই বাঁশ দিয়ে পণ্য তৈরি করে ১৩০০ টাকা বিক্রি করা যেত। কিন্তু বাঁশের দাম বাড়ার কারণে এখন ৫০০ টাকার বাঁশ কিনে সেই বাঁশ দিয়ে পণ্য তৈরির পর ১০০০ টাকাও বিক্রি করা যায় না। নানা পণ্য তৈরি করে হাট-বাজারে বিক্রি করে কোন মতো চলে তার সংসার।
তিনি আরও জানান, বাঁশের তৈরি পণ্য ছাড়া অন্য কোন কাজ তার জানা নেই। তাই পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে এই কাজই করেন। তবে সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা পেলে আমার মতো পরিবারগুলো আরও ভালো পণ্য তৈরি করে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল