ঢাকা, সোমবার, ২২ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন কি?
ডা. যতীন্দ্র নাথ সাহা

আজ শুক্রবার  ১৭ মে বিশ্ব উচ্চ রক্ত চাপ দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। এবছর বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবসের প্রতিপাদ্য “সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপুন, নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং দীর্ঘজীবী হোন”। তাই আসুন সচেতন হই ভালো থাকি।

উচ্চ রক্তচাপ :

যদি কারো ধমনীর রক্তচাপ সবসময় ১৪০/৯০ মি. মি. পারদের বেশি থাকে তাহলে সেই ব্যক্তির হাইপারটেশন আছে বলে গণ্য করা হয়। 

রক্তচাপ মাপার সঠিক নিয়ম:

১.রক্তচাপ মাপার ৩০ মিনিট আগে থেকে কিছু খাওয়া বা পান করা যাবে না। ২.প্রস্রাবের চাপ থাকলে অব্যশই প্রস্রাব করার পর রক্তচাপ মাপতে হবে। ৩.চেয়ারের পেছন দিকে হেলান দিয়ে ৫ মিনিট বসার পর রক্তচাপ মাপতে হবে। ৪.রক্তচাপ মাপার সময় দুই পা মেঝেতে রেখে বসতে হবে। ৫.হাত টেবিলের উপর রাখতে হবে যাতে করে বাহু বুক বরাবর থাকে। ৬.রক্তচাপ মাপার মেশিনের CUFF (কাফ) টি উন্মুক্ত বাহুতে (অর্থাৎ কোন কাপড়ের উপর নয়) হালকা ভাবে বাঁধতে হবে। ৭.রক্তচাপ মাপার সময় কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে।

উচ্চ রক্তচাপ এর লক্ষণ:

সকল হাইপারটেনশন রোগীদের লক্ষণ থাকে না এবং হাইপারটেনশনের নির্দিষ্ট কোন লক্ষণও নেই। তবে সাধারণত নিচের লক্ষণ গুলো এ রোগীদের দেখা যায়: ১. মাথা ঘুরানো ও মাথা ব্যথা। ২.ঘাড় ব্যথা  ৩.অস্থির লাগা ৪.বমি বমি ভাব। ৫. ঘুমের সমস্যা। যে সকল রোগীদের কোন লক্ষণ থাকে না তাদের উচ্চ রক্তচাপ অনেক সময় ধরা পড়ে না এবং তারা কোন ঔষধও গ্রহণ করে না । এরা অনেক সময় জরুরি অবস্থা যেমন: স্ট্রোক, হার্টঅ্যাটাক ,হার্ট ফেইলিওর  অবস্থায় হাসপাতালে আসে এবং অনেক সময় বাঁচানো  সম্ভব হয় না। তাই হাইপারটেনশনকে নীরব ঘাতকও বলা হয়।

উচ্চ রক্তচাপ রোগীর কি কি করণীয়:

১.আলগা লবণ খাওয়া কমাতে হবে ,রান্নায়ও কম লবণ দিতে হবে।  ২. ধূমপান পরিহার করতে হবে। ৩. চর্বি জাতীয় খাবার পরিহার করে শাক-সবজি, ফল বেশি করে খেতে হবে। ৪.ব্যয়াম /শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে অথবা প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটতে হবে। ৫.ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে ,বিশেষ করে মেদভুড়ি যাতে না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ৬. চিন্তা মুক্ত থাকার অভ্যস করতে হবে। ৭.নিয়মিত ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।

হাইপারটেনশনের জন্য কোন ঔষধ টি খাবেন:

উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়লে ফার্মেসি থেকে নিয়ে যেকোন প্রেশারের ঔষধ খাওয়া ঠিক না। বাজারে অনেক ধরণের ঔষধ পাওয়া যায় কিন্তু কোন ব্যক্তির  শরীরে অন্য কোন রোগ যেমন: হাঁপানি,ডায়াবেটিস, হার্ট বা কিডনির রোগ আছে কি না তার উপর নির্ভর করে ঐ রোগীর জন্য সঠিক ঔষধ কোনটি। রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রত্যেক ব্যক্তির  শরীরের সাথে মানানসই ঔষধ সেবন করা উচিত। ডায়াবেটিস, হার্ট বা কিডনির রোগ থাকলে সেই ঔষধ গুলোও নিয়মিত সেবন করতে হবে। পাশাপাশি চিকিৎসক এর পরামর্শ নিয়ে রাখা উচিত। 

লেখক : কনসালটেন্ট , কার্ডিওলজি বিভাগ, আলোক হেলথকেয়ার ,মিরপুর, ঢাকা।

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর