ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

বয়স্কদের বাতব্যথা ও অক্ষমতার চিকিৎসা
ডা. মো. সফিউল্যাহ প্রধান
ডা. মো. সফিউল্যাহ প্রধান

মানুষের শরীরের মাংস, হাড় ও জয়েন্টে দীর্ঘমেয়াদি যে ব্যথা হয় তাকে বাতব্যথা বলে। শরীরের বিভিন্ন অংশে যখন কোনো ব্যথা ছয় সপ্তাহ বা দেড় মাসের বেশি সময় ধরে স্থায়ী থাকে, তখন সেই ব্যথাকে ক্রনিক বাতব্যথা বলা হয়। সাধারণত মধ্যবয়সী ও বয়স্করা বাতব্যথায় ভুগে থাকেন।

লক্ষণ : হাত, পা ও হাঁটুর গিরায় ব্যথা, মাংশপেশী চাবানো কামড়ানো বা জ্বালা পোড়া করা। হাত পায়ের গিরা ফুলে যাওয়া। সকালে ঘুম থেকে উঠার পর ব্যথার তীব্রতা বেশি থাকা। হাত-পা নাড়াতে সমস্যা। এছাড়াও স্কিনে র‌্যাশ আসা, মাথার চুল পড়ে যাওয়া, মুখের ভেতর ঘা হওয়ার মতো লক্ষণও দেখা যেতে পারে।

কারণ : বাতব্যথা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জেনিটিক কারণে হয়। যেমন কারো বাবা-মা ও রক্তসম্পর্কীয় আত্মীয়দের মাঝে যদি এ রোগের ইতিহাস থাকে। এছাড়া বয়সজনিত কারণে- বিশেষ করে মহিলাদের মেনোপজের পরে হাড়ের ঘনত্ব কমে যায় তখন বাতব্যথার লক্ষণ প্রকাশ পায়। আমরা শারীরিক পরিশ্রম কম করে থাকি। এতে স্থূলতা বৃদ্ধি পায় ফলে হাঁটুর গিটে অতিরিক্ত একটা চাপ পড়ে। সেখান থেকেও বাতব্যথা হয়ে থাকে। কাজের ভুলে, আঘাত পেলে ও খাদ্যাভ্যাসসহ আরো অনেক কারণে বাতব্যথা হতে পারে।

করণীয় : খুব কম ক্ষেত্রে বাতব্যথা পুরোপুরি নিরাময় করা যায়। তবে ওষুধ, সঠিক ব্যয়াম এবং ভালো জীবনধারা মেনে চললে এই ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। অল্প ব্যথায় গরম সেঁক দিলে কিছুটা আরাম হয়। শুধু ওষুধ দিয়ে বাতব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব না। অন্যদিকে ব্যথার ওষুধ দীর্ঘদিন সেবনে কিডনি, লিভারে নানা রকম জটিলতা, খাদ্যনালিতে ঘা হওয়ার মতো গুরুতর সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। ওষুধ হচ্ছে বাত রোগ চিকিৎসার একটি অংশ মাত্র। কিন্তু এর বাইরেও আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে, যেমন সুষম খাবার গ্রহণ করা, শরীরের ওজন ঠিক রাখা ও নিয়মিত ব্যায়াম করা। 

বয়স্করা ব্যথায় অচলাবস্থার কারণে হাড়ের সংযোগস্থল আরও স্টিফ বা শক্ত হয়ে যায়, তখন ব্যথা বেশি বাড়ে। এজন্য নিয়মিত ব্যায়াম বা হাঁটাচলা করতে হবে। বয়স্ক রোগীর শারীরিক অক্ষমতায় রিহেব-ফিজিও চিকিৎসা নিতে হয়, এজন্য একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

লেখক : ফিজিও বিশেষজ্ঞ সহযোগী অধ্যাপক, আইআইএইসএস ও কনসালটেন্ট, ডিপিআরসি।

বিডি-প্রতিদিন/শআ



এই পাতার আরো খবর