ইথিওপিয়ার টিগ্রে অঞ্চলে চলমান যুদ্ধে কয়েকশ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এমন তথ্য দিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সেখানে নারীদের ওপর চলমান নিষ্ঠুরতাকে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে তুলনীয় হিসেবে অভিহিত করেছে সংস্থাটি।
বুধবার প্রকাশিত অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইথিওপিয়া ও ইরিত্রিয়ার সৈন্যরা কয়েকশ নারীকে ধর্ষণ করেছে। সংস্থাটির মহাসচিব আগনেস ক্যালামার্ড বলেন, ‘এটা পরিষ্কার যে টিগ্রের নারী ও মেয়েদের দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক ও মানসিক ক্ষতিসাধনে ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতাকে যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যৌন অপরাধের এই ভয়াবহতা ও মাত্রা বেদনাদায়ক, এটা যুদ্ধাপরাধ ও সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে পড়ে।’
প্রতিবেদন তৈরিতে মার্চ ও জুনের মধ্যে অ্যামনেস্টি যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া ৬৩ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছে। কয়েকজন জানিয়েছেন, কয়েক সপ্তাহ বন্দি রেখে তাদের একাধিক পুরুষ যৌন নির্যাতন করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, তাদের পরিবারের সামনে ধর্ষণ করা হয়। ২১ বছর বয়সী একজন বলেন, ‘‘তারা আমাদের ধর্ষণ করেছে, অনাহারী রেখেছে। অনেকে একের পর এক আমাদের ধর্ষণ করেছে।''
প্রতিবেদন অনুযায়ী টিগ্রের হাসপাতালগুলোতে ২০২১-এর ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যেই ১,২৮৮ জন যৌন নির্যাতনের শিকার নারী চিকিৎসা নিতে এসেছেন। তবে অ্যামনেস্টি বলছে, পরিসংখ্যানের বাইরে থাকা নারীদের সংখ্যা আরও বেশি।
এদিকে ইথিওপিয়ার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহনী সম্প্রতি তিন সৈন্যকে সহিংসতার জন্য সাজা ও আরও ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। এ নিয়ে আরও তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর।
উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বরে ইথিওপিয়ার সরকার টিগ্রে অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নেওয়া টিগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে। সরকারকে সহযোগিতা দিতে এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে ইরিত্রিয়াও।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক মাসে সেখানে এক লাখ ৭০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
সূত্র : ডয়চে ভেলে
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ