ঢাকা, বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

পুরুষ হয়েও যে কারণে আঁটসাঁট স্কার্ট-হাইহিল-নারীর পোশাক পরেন তিনি (ভিডিও)
অনলাইন ডেস্ক
মার্ক ব্রায়ান। সংগৃহীত ছবি

প্রচলিত ধারার থেকে ভিন্ন রুচির মানুষকে প্রায়ই অনেক কটু কথা শুনতে হয়। পুরুষ হয়েও নারীর পোশাক পরার কারণে তীর্যক মন্তব্য উপেক্ষা করে এক ব্যক্তি নিজেকে ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। মার্কিন এই পুরুষের নাম মার্ক ব্রায়ান। খবর ডয়চে ভেলের।

হাই-হিল জুতা, টাইট স্কার্ট ও টাই – এটাই তার সবচেয়ে পছন্দের সাজ। তার কাছে এমন পরিধান অত্যন্ত স্বাভাবিক। তার মতে, তিনি হাইহিল জুতা পরেন, কারণ তার সেটা ভালো লাগে। তাছাড়া এগুলো খুবই স্টাইলিশ, পায়ের বাহার বাড়িয়ে দেয়।

তার কাছে পোশাক-পরিচ্ছদের কোনো লিঙ্গ নেই। সেই উপলব্ধি ও তার আত্মবিশ্বাসী মনোভাব মডেল হিসেবে তার চাহিদা বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রায় প্রতি সপ্তাহান্তেই তাকে শুটিংয়ের জন্য দূরে কোথাও যেতে হয়। যেমন ডেনমার্কের এক নারীবিষয়ক পত্রিকার মডেল হিসেবে তিনি বার্লিনে এসেছেন। তার বয়স কিন্তু ৬১ বছর! 

মার্ক বলেন, ‘‘আমি তিনটি ভোগ ম্যাগাজিন ও ইন্টারভিউ ম্যাগাজিনে স্থান পাবো, আগে এ কথা বললে আমি বলতাম আপনি পাগল। কোনো সম্ভাবনাই ছিল না।’’

২০২০ সালে তিনি ইন্টারনেটে নিজের ছবি পোস্ট করা শুরু করেন। সে সময়ে তেমন সাফল্য আসেনি। এখন ইনস্টাগ্রামে তার ফলোয়ারের সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। প্রায় প্রতিদিনই তিনি নিজের কোনো পছন্দের পোশাক পোস্ট করেন। 

মার্ক বলেন, ‘‘এই বয়সে ইনফ্লুয়েন্সর হবার অভিজ্ঞতা এখনো হজম করছি। আমার জনপ্রিয়তা ও এত তরুণ ফলোয়ার সত্যি আত্মতৃপ্তির কারণ। মানুষের ভয় কাটানো ও পছন্দের পোশাক সম্পর্কে লজ্জা দূর করতে সাহায্য করাই ইনফ্লুয়েন্সরের কাজ হওয়া উচিত।”

দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে মার্ক জার্মানির দক্ষিণে ছোট একটি শহরে স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে বাস করছেন। কলেজে পড়ার সময়েই তিনি হাইহিল জুতা পছন্দ করতেন। তবে পাঁচ বছর আগে তিনি দৈনন্দিন জীবনেও নারীর পোশাক পরার সিদ্ধান্ত নেন। 

মার্ক ব্রায়ান জোর দিয়ে বলেন, ‘‘আমি ফেমিনিন বা মেয়েলি হবার বা নারী হিসেবে বিবেচিত হবার চেষ্টা করছি না। পুরুষ হিসেবেই আমি শুধু পছন্দের পোশাক পরতে চেয়েছিলাম। আমি সেটাকে নিজের হাইব্রিড স্টাইল বলি। আমি পুরুষালি ও মেয়েলি স্টাইলের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটাই।”

মার্ক পেশায় মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার। তিনি টেস্কাসে জন্মগ্রহণ করেন। প্রতিদিন তিনি ট্রেনে করে কাজে যান। স্টেশনের প্ল্যাটফর্মই তার ক্যাটওয়াকের ক্ষেত্র হয়ে ওঠে৷ মানুষের কৌতূহলি দৃষ্টি বা তির্যক মন্তব্যে তার কিছু যায় আসে না। 

তিনি বলেন, ‘‘আমি যে আত্মবিশ্বাস দেখাই, তার ফলেই হয়তো বেশিরভাগ মানুষ আমাকে বিরক্ত করে না। আমার ধারণা, দুর্বলতা দেখালেই মানুষ আক্রমণ করে থাকে। আমি মোটেই দুর্বলতা দেখাই না। তাই সাবধান!”

মার্ক নিজেকে কোনো বাঁধাধরা ছকে ফেলতে চান না। অনেকে ভাবেন, তার যৌন অভিমুখীতা বোধহয় ভিন্ন। সে কথা শুনে তিনি শুধু মুচকি হাসেন। তার মতে, সবারই নিজস্ব মতামতের অধিকার রয়েছে। তিনি তর্ক করে সংশোধন করেন না। পোশাক-পরিচ্ছদ মোটেই যৌন অভিমুখীতা নির্ণয় করে না বলে তিনি মনে করেন।

‘পুরোটাই আসলে রুচির ওপর নির্ভর করে। সে বিষয়ে তর্কের কোনো অবকাশ থাকতে পারে না।’

ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

 



এই পাতার আরো খবর