ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

পার্লামেন্টে যৌন হেনস্থা, ক্ষমা চাইলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন

অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের বিভিন্ন দফতরে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠায় ক্ষমা চাইলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। ঠিক এক বছর আগে প্রথম ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন পার্লামেন্টেরই এক কর্মী, ব্রিটনি হিগিনস। তার দেখাদেখি পার্লামেন্টের আরও কয়েকজন নারী কর্মী যৌন হেনস্থা ও কর্মক্ষেত্রে তাদের অনবরত বিব্রত করার অভিযোগ আনেন, যা নিয়ে দীর্ঘ রাজনৈতিক উত্তেজনা শুরু হয় অস্ট্রেলিয়াজুড়ে। ভীষণ চাপে পড়ে যান প্রধানমন্ত্রী স্টক মরিসন। এরপর তিনি ঘটনাগুলো তদন্তের নির্দেশও দেন।

এবার পার্লামেন্টে দাঁড়িয়েই মঙ্গলবার ব্রিটনির কাছে সকলের হয়ে ক্ষমা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। শুধু তাই নয়, যৌন হেনস্থার শিকার হওয়া বাকি নারীদের কাছেও ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন তিনি।

স্কট মরিসন বলেন, “আমি ৃক্ষমাপ্রার্থী মিস হিগিনসের কাছে। এখানে তার যা ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়েছে তা ভাবা যায় না। সেই সঙ্গে আমি ক্ষমাপ্রার্থী তাদের কাছেও, যারা হিগিনসেরও আগে এই ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন।”

পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে মরিসন কার্যত মেনে নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার রাজনীতিতে এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে পার্লামেন্টের নারী কর্মীদের ওপরে এই ধরনের যৌন অত্যাচার হয়ে এসেছে। এবং সবচেয়ে বড় কথা, নারী কর্মীদের আনা অভিযোগ আগে সেভাবে গুরুত্ব দিয়ে শোনাই হত না। ২০১৯ সালে এক মন্ত্রীর দফতরে ব্রিটনিকে ধর্ষণ করেছিল তারই এক সহকর্মী। ব্রিটনির অভিযোগ, তাকে পুলিশের কাছে যেতে প্রথমে বাধা দেওয়া হয়েছিল। প্রায় এক বছর পরে নিজের অভিযোগ নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন ব্রিটনি। তার দেখাদেখি পার্লামেন্টের আরও অনেক নারী কর্মী নিজেদের হেনস্থার অভিযোগ প্রকাশ্যে আনেন।

নারীদের উপরে হওয়া যৌন নির্যাতন নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সরকার যে কয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল, তার মধ্যে অন্যতম জেনকিন্স রিভিউয়ের সাড়ে চারশ’ পাতার রিপোর্ট জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ায় কর্মরত নারীদের এক-তৃতীয়াংশ কর্মক্ষেত্রে নিয়মিত যৌন হেনস্থার শিকার হন। মঙ্গলবার নিজের বক্তৃতায় কার্যত সেই সব অভিযোগই তুলে ধরেছেন মরিসন। বলেছেন, “এই পরিস্থিতির পরিবর্তন প্রয়োজন। এর পরিবর্তন হচ্ছে এবং আমার বিশ্বাস এর পরিবর্তন হবেই।”

মরিসনের সঙ্গে ব্রিটনির কাছে মঙ্গলবার ক্ষমা চেয়েছেন বিরোধী দলনেতা লেবার পার্টির অ্যান্টনি অ্যালবানিজও। ব্রিটনির উদ্দেশে তাকে বলতে শোনা গিয়েছে, “নীরবতার সংস্কৃতিকে ভেঙে তছনছ করে দিয়েছেন আপনি।”

এদিন গোটা বক্তৃতা পার্লামেন্টের পাবলিক গ্যালারিতে বসে শুনেছেন ব্রিটনি। তার পাশে ছিলেন হেনস্থার শিকার হওয়া পার্লামেন্টের আরও তিন সাবেক নারী কর্মচারীও। বুধবার স্থানীয় জাতীয় প্রেসক্লাবে বক্তব্য রাখবেন ব্রিটনি। তার সঙ্গে থাকবেন যৌন হেনস্থার শিকার হওয়া আরেক নারী গ্রেস টেমও। গ্রেসের অবশ্য বক্তব্য, “নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই এখন ক্ষমা চাওয়ার নাটক করছেন মরিসন।” সূত্র: আল-জাজিরা, নিউ ইয়র্ক টাইমস, দ্য গার্ডিয়ান

বিডি প্রতিদিন/কালাম



এই পাতার আরো খবর