মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ তহবিলের (ওয়ানএমডিবি) অর্থ কেলেঙ্কারির প্রথম মামলায় ২০২০ সালে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাককে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এই রায় বহাল রেখেছেন।
মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে ঘোষণা দেয়, হাইকোর্টের রায় সঠিক ছিল।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, আপিলে হারার মানে এখন তার সাজা শুরু হবে। এর মাধ্যমে নাজিব রাজাক হবেন মালয়েশিয়ার প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যিনি কারাগারে থাকবেন।
পাঁচ বিচারকের পক্ষে মালয়েশিয়ার প্রধান বিচারপতি মাইমুন তুনান ম্যাট বলেন, আমরা তার আপিলের কোনো মেরিট পাইনি।
উল্লেখ্য, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেন নাজিব রাজাক। তার বিরুদ্ধে ১২ বছরের সাজা স্থগিতেরও আবেদন করেন তিনি। তবে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট রায় স্থগিতের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।
২০০৯ সালে মালয়েশিয়ায় নতুন অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ (ওয়ানএমডিবি) তহবিলটি গঠন করা হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা। ২০১৫ সালে ব্যাংক ও শেয়ারহোল্ডারদের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থতার কারণে এই তহবিলের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে, তহবিল থেকে প্রায় চারশ কোটি মার্কিন ডলার অবৈধভাবে আত্মসাৎ করা হয়েছে আর ব্যক্তিগত হিসাবে তা হস্তান্তর করা হয়েছে।
২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নাজিব রাজাক ও তার জোটের ঐতিহাসিক পরাজয়ের নেপথ্যে বড় ভূমিকা রাখে ওয়ানএমবিডি আর্থিক কেলেঙ্কারি। ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসেন দেশটির আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। ক্ষমতা ছাড়ার মাত্র দুই মাসের মধ্যে নাজিবের বিরুদ্ধে প্রতারণার তিনটি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের একটি অভিযোগ আনা হয়। সব মিলে তার বিরুদ্ধে মোট ৪২টি অভিযোগ আনা হয়। এর বেশিরভাগই ওয়ানএমবিডি তহবিল সংক্রান্ত।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল