ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদনের পর টালমাটাল আদানি সাম্রাজ্য
অনলাইন ডেস্ক
গৌতম আদানি

মার্কিন বিনিয়োগ গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ সম্প্রতি তাদের এক গবেষণা প্রতিবেদনে গৌতম আদানির ব্যবসার নানা জালিয়াতি ও প্রতারণা তুলে ধরেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, আদানি গ্রুপ আঙুল ফুলে মাত্র তিন বছরে কলাগাছ হয়েছে। শেয়ার বাজারকে হাতিয়ার বানিয়েছেন আদানি। কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে তিনি নিজের সম্পদ বাড়িয়েছেন।

এই রিপোর্ট আদানির ব্যবসায় বড় আঘাত হেনেছে। ধস নেমেছে আদানি গ্রুপের শেয়ারে। প্রতিবেদন প্রকাশের পর টালমাটাল এশিয়ার এই শীর্ষ ধনীর ব্যবসা। পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতনে কয়েকদিনেই ৫ হাজার কোটি ডলার হারিয়েছেন তিনি।

বিবিসি জানিয়েছে, এ গ্রুপের অন্য কোম্পানিগুলোর শেয়ার দরে আরও টালমাটাল অবস্থা দাঁড়িয়েছে, মুম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জে তাদের শেয়ারগুলো লেনদেন বন্ধ হয়ে গেছে। যদিও সোমবার শেয়ার বাজার খুলেছে।

এদিকে গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, প্রতারণার অভিযোগ খণ্ডন করে ৪১৩ পৃষ্ঠার একটি ব্যাখা প্রকাশ করেছে আদানি গ্রুপ। ওই ব্যাখায় দাবি করা হয়েছে, এটা ভারতের ওপর আক্রমণ।

খবর অনুসারে, বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ শান্ত করতেই দীর্ঘ এই ব্যাখা প্রদান করেছে আদানি গ্রুপ।

আদানি গ্রুপের ব্যাখায় আরও বলা হয়েছে, এটা (গবেষণা প্রতিবেদন) সুনির্দিষ্ট কোম্পানির ওপর শুধু অন্যায্য আক্রমণই নয়, বরং ভারতের স্বাধীনতা, অখণ্ডতা এবং দেশের (ভারতের) প্রতিষ্ঠানসমূহ, প্রবৃদ্ধির ইতিহাস এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা ওপর পূর্বপরিকল্পিত আক্রমণ।

গার্ডিয়ানের খবর অনুসারে, সোমবার ভারতের শেয়ার মার্কেট খোলার কয়েক ঘণ্টা পূর্বে আদানি গ্রুপ এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। গত সপ্তাহে দেশটির শেয়ার মার্কেটের সার্বিক মূল্য ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নিচে নামে।

এদিকে আদানি গ্রুপের সিএফও বলেছেন, হিন্ডেনবার্গ যে ৮৮টি প্রশ্ন তুলেছে সেগুলোর জবাব দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি রিসার্স করেনি বরং আদানি গ্রুপের গোপন তথ্য প্রকাশ করেছে। এর মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।  

রাজনীতিতেও তোলপাড় ক্ষমতাসীন বিজেপির ‘কাছের ব্যক্তি’ হিসেবে পরিচিত আদানির এই ‘প্রতারণার’ অভিযোগ নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছে ভারতের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় কংগ্রেস। শনিবার দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের প্রশ্ন, আদানি গোষ্ঠীর সংস্থাগুলোর শেয়ারের ব্যাপক দরপতন হওয়ায় এলআইসি ও স্টেট ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের মূল্য ৭৮ হাজার কোটি রুপি কমলেও অর্থমন্ত্রী নীরব কেন? তদন্তকারী সংস্থাগুলোও কেন নীরব?

আদানি গোষ্ঠীর কোম্পানিগুলোতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিনিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা। তিনি বলেন, হিনডেনবার্গ আদানিদের সম্পর্কে এত গুরুতর অভিযোগ প্রকাশ্যে আনার পরেও এলআইসি ও এসবিআইয়ের মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলো আদানির কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ বহাল রেখেছে কেন।

বিএসপি নেত্রী মায়াবতী বলেছেন, হিনডেনবার্গের প্রতিবেদনে শেয়ারবাজার ধাক্কা খাচ্ছে। জড়িয়ে পড়েছে ভারতের কোটি কোটি মানুষের অতি কষ্টে উপার্জিত অর্থ। অথচ সরকার এ বিষয়ে স্পিকটি নট। অবিলম্বে সরকারি বিবৃতি দিয়ে বিষয়টির ব্যাখ্যা দাবি করেছেন তিনি।

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল



এই পাতার আরো খবর