ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

প্রিগোজিন: এক দুর্ধর্ষ জীবনের রহস্যময় পরিণতি
অনলাইন ডেস্ক

ওয়াগনার বস প্রিগোজিন একসময় ছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠজন। তাকে অনেকে ডাকতেন ‘পুতিনের রাঁধুনি’ বলে। তবে পুতিন বলয়ে থেকেই সম্প্রতী তিনি পুতিনেরই বিরুদ্ধে গলা চড়িয়েছিলেন। ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে ফিরে দিয়েছিলেন বিদ্রোহের ডাক। তার দল পুতিনের একটি আঞ্চলিক সেনা সদর দখল করেছিল। তিনিও বহর নিয়ে ছুটেছিলেন মস্কোর দিকে।

পুতিন ওয়াগনার বাহিনীকে সরাসরি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিতে চাইলে ক্ষেপে যান স্বতন্ত্র বলয় গড়া প্রিগোজিন। পুতিনের এমন আহ্বানকে তিনি অপমান হিসেবে নিয়েই বিদ্রোহের ডাক দেন। এরপর বেলারুশের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি সামলে নেন পুতিন। একদিনের মাথাতেই ওয়াগনার বিদ্রোহের অবসান ঘটে। ওয়াগনার বাহিনীকে পাঠানো হয় বেলারুশে। কিছুদিন লাপাত্তা ছিলেন প্রিগোজিন।

পরে অবশ্য প্রিগোজিনকে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে দেখা যায়। পরিস্থিতিও হয় অনেকটা স্বাভাবিক। তবে দুই মাস পর পুরো ঘটনা উল্টে যায়। হঠাতই বিমান দুর্ঘটনায় প্রিগোজিনের মৃত্যুর খবর দেয় রাশিয়া। তবে একে নিছক দুর্ঘটনা হিসেবে মানতে নারাজ পশ্চিমাদের অনেকেই। 

বিদ্রোহের পর অনেকেই বুঝেছিলেন এর চড়া মূল্য দিতে হবে প্রিগোজিনকে। তার জীবন ছিল মৃত্যুর খুব কাছাকাছি। 

মস্কো থেকে সেন্টপিটার্সবার্গে যাওয়ার পথে বিধ্বস্ত হয় প্রিগোজিনের বিমান। সেই সাথে সাথে এক দুর্ধর্ষ জীবনের রহস্যময় প্রস্থান ঘটে। 

ব্রিদোহী ওয়াগনারদের শুরুতেই বিশ্বাসঘাতক তকমা দিয়েছিলেন পুতিন। তিনি সমুচিত শাস্তি দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছিলেন। অবশ্য সমঝোতার পর শাস্তি নিয়ে আর কোনো কথা বলেননি পুতিন। এমনকি ওয়াগনার বিদ্রোহীদের শাস্তি দেবেন না বলে চুক্তিতে সইও করেছিল পুতিন প্রশাসন। 

সেন্ট পিটার্সবার্গের কারাগারেই কেটেছিল প্রিগোজিনের যৌবনের প্রথম দিকটা। পরে অবশ্য চুরির দায় থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৯০ এর দশকে ব্যবসা শুরু করে প্রিগোজিন। তখন তাকে সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা করেন পুতিন। 

পুতিনের হয়ে লড়াই করতেই আফ্রিকা, সিরিয়া ও ইউক্রেনে গিয়েছিল ওয়াগনার বাহিনী। তবে ইউক্রেনের বাখমুত লড়াইয়ে সাফল্য পেয়ে পুতিন প্রশাসনের সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠেন ওয়াগনার বস প্রিগোজিন। পুতিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে তিনি কয়েকবার তুলোধুনো করেছেন ভিডিও ও অডিও বার্তায়। তখন থেকে নিজেকে পরাক্রমশালী ভাবতে শুরু করা প্রিগোজিন ও পুতিনের সম্পর্কে ফাটলের বিষয়টি সামনে আসে। আর সেই সংঘাতের চূড়ান্ত রূপ দেখা যায় ওয়াগনার বিদ্রোহে।

বিবিসি এক অসর্থিত সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, প্রিগোজিনকে বহন করা বিমানে সামরিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। যদিও বিবিসি পুরোপুরিভাবে এই তথ্যের সত্যতা প্রমাণ করতে পারেনি। 

 

সূত্র: বিবিসি

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর