ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

যে তিনভাবে পাকিস্তানে সরকার গঠন হতে পারে
অনলাইন ডেস্ক
নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি

পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।  ফলে আবশ্যিকভাবে দেশটিতে জোট সরকার গড়তে হচ্ছে। কিন্তু ক্ষমতার ভাগাভাগির বিষয়টি এখনো স্পষ্ট হয়নি। এ নিয়ে কোনো দলই মুখ খোলেনি।

নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা, রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও স্বচ্ছতা নিয়ে অভিযোগ সব মহলে আলোচিত হচ্ছে। পরবর্তী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী যিনিই হন না কেন, আগামী দিনগুলোতে তাকে  জাতীয় পরিষদে ১৬৯ জন সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখাতে হবে।

এমন অচলাবস্থার মধ্যে এখন কী ঘটতে পারে—এ প্রশ্ন অনেকের মনে।

আগামী দিনগুলোয় পাকিস্তানের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মোটাদাগে তিনটি দৃশ্যপট দেখা যেতে পারে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

পিএমএল-এনের জোট সরকার

সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)। পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের ফল অনুসারে, এবারের নির্বাচনে দলটি ৭৫টি আসনে জয় পেয়েছে। অন্যদিকে বিলওয়াল ভুট্টো জারদারির দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫৪টি আসন। রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটাতে জোট গড়ে ক্ষমতায় যেতে চাইছে পিএমএল-এন ও পিপিপি। আগামী কয়েক দিনে এ দুই দল ক্ষমতা ভাগাভাগির জন্য সমঝোতায় পৌঁছাতে পারে।

এই জোট সরকারে যুক্ত হতে পারে রাজনৈতিক দল মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট-পাকিস্তান (এমকিউএম-পি), জেইউআই-এফ ও আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দল। যদিও এখন পর্যন্ত সরকার গঠন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলেছে এমকিউএম-পি। নতুন জোট সরকারে প্রধানমন্ত্রী পদে দেখা যেতে পারে নওয়াজ শরিফ কিংবা তার ভাই শাহবাজ শরিফকে। এ ছাড়া সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদ শরিকদের দেওয়া হতে পারে।

পাকিস্তানে পিএমএল-এন ও পিপিপির জোট নতুন নয়। দল দুটি জোট গড়ে পার্লামেন্টের অনাস্থা ভোটে ইমরান খানকে বিদায় করেছিল। গত আগস্ট পর্যন্ত ১৬ মাস পিএমএল-এন ও পিপিপির জোট সরকার দেশ শাসন করেছে। ওই সরকারে শাহবাজ শরিফ প্রধানমন্ত্রী ও বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।

স্বতন্ত্রদের ক্ষমতা গ্রহণ 

এবারের ভোটের লড়াইয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হয়েছেন। তাদের প্রায় সবাই ইমরান খান ও তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সমর্থক। আইনি প্রতিবন্ধকতায় পিটিআই এবার দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি। কৌশল হিসেবে স্বতন্ত্র লড়াইয়ে নামেন দলটির নেতারা। পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ফল অনুসারে স্বতন্ত্ররা জিতেছে ১০১টি আসনে।

পার্লামেন্টে এখন যদি তারা একক ব্লকে বা ছোট কোনো দলে যুক্ত হন, তাহলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে জোর পদক্ষেপ নিতে পারেন। সংরক্ষিত আসন বরাদ্দ পেতে পারেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রী পদেও প্রার্থী দাঁড় করাতে পারেন। এ ছাড়া জোট গড়ার জন্য অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও আলোচনা করতে পারে স্বতন্ত্রদের দল বা জোট। এর ফলে প্রকারান্তরে ইমরান-সমর্থিতদের পাকিস্তানের ক্ষমতার কেন্দ্রে আবারও দেখা যাবে। এই পরিস্থিতি ইমরানের মুক্তির পথ খুলে যাবে। যদিও আইনি বাধা থাকায় ইমরান নিজে সরকারপ্রধান হওয়ার লড়াইয়ে আপাতত শামিল হতে পারবেন না।

সরকার প্রধান বিলাওয়াল 

 ভোটের হিসাবে পিপিপি তৃতীয় অবস্থানে আছে। কিন্তু পিপিপি জোট গড়ার ক্ষেত্রে বিলাওয়ালকে সরকারপ্রধানের পদে বসানোর কৌশল বেছে নিয়েছে। এ নিয়ে দলটি পিএমএল-এনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনের আগে পিপিপির পক্ষ থেকে এমনটাই আভাস দেওয়া হয়েছিল। বিলাওয়াল বলেছিলেন, তিনি বহুবিধ সংকটে জর্জরিত পাকিস্তানকে মুক্তির পথ দেখাতে একটি নতুন প্রক্রিয়া চালু করবেন। কেননা দেশের বয়স্ক নেতৃত্ব এসব চ্যালেঞ্জ সামাল দিতে পারছেন না। সূত্র : রয়টার্স

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল



এই পাতার আরো খবর