ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

ধনী বিদেশিদের ‘সলিডারিটি ভিসা’ দেবে পর্তুগাল
অনলাইন ডেস্ক
পর্তুগালের পতাকা। ছবি: সংগৃহীত

বিনিয়োগের মাধ্যমে পর্তুগালে স্থায়ীভাবে বসতি গড়ার সুযোগ খোঁজা ধনী বিদেশিদের জন্য গোল্ডেন ভিসার আদলে ‘সলিডারিটি ভিসা’ চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে দেশটির নতুন সরকার।

বর্তমানে আবাসন সংকটে ভুগছে ইউরোপের দেশ পর্তুগাল। তাই অভিবাসীদের জন্য বাসস্থান এবং দেশটির নাগরিকদের সাশ্রয়ী মূল্যে আবাসন দিতেই গোল্ডেন ভিসার মতো একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার এ তথ্য দিয়েছেন দেশটির মন্ত্রিপরিষদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যান্তোনিও লেইতো আমারো।

মন্ত্রী বলেন, ‘সলিডারিটি ভিসা’ নামের এই প্রকল্পটি গোল্ডেন ভিসা প্রকল্পের পরিপূরক হবে। গোল্ডেন ভিসা প্রকল্পের আওতায় ২০১২ সাল থেকে অ-ইউরোপীয় ধনী নাগরিকদের বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে পর্তুগালে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। গোল্ডেন ভিসা চালুর পর থেকে এর আওতায় বিদেশিরা ৭৩০ কোটি ইউরো বিনিয়োগ করেছেন পর্তুগালে। তবে সমালোচকেরা বলছেন, এই ভিসা প্রকল্প আবাসন সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। পর্তুগালের সদ্য বিদায়ী সরকার গত বছরের ১৬ মার্চের পর থেকে গোল্ডেন ভিসা প্রকল্প বন্ধ করে দেয়। এটি বন্ধে পর্তুগালের উপর ইউরোপীয় ইউনিয়নও চাপ দিয়ে আসছিল।

পর্তুগালে দীর্ঘমেয়াদে বসবাসে আগ্রহী ধনী বিদেশিরা রিয়েল এস্টেট বা আবাসন খাতে বিনিয়োগে বেশি আগ্রহ দেখিয়েছেন। কিন্তু সেই সুযোগ সীমিত করে এনেছিল আগের সরকার। বরং সংস্কৃতির বিকাশ, গবেষণা কিংবা কর্মক্ষেত্র তৈরি হবে এমন উদ্যোগে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা হচ্ছিল।

২০০৭ সাল থেকে ইউরোপের যেকোনও দেশের ভিসা নিয়ে আসা ব্যক্তিদের কাজের আওতায় নিয়মিত হওয়ার সুযোগ দিয়ে আসছিল লিসবন। ২০১৮ সালে অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্যও এই সুযোগ করে দেয় সাবেক সোশ্যালিস্ট সরকার। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই প্রক্রিয়ার অবসান ঘটিয়েছে মাস দুয়েক আগে ক্ষমতায় আসা মধ্য-ডানপন্থি সরকার। নতুন নীতির আওতায় পর্তুগালে অনিয়মিতভাবে আসা বিদেশিদের নিয়মিত হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে গেছে।

এই নীতি ঘোষণার পরদিন সাক্ষাৎকারে মন্ত্রিপরিষদ বিষয়ক মন্ত্রী লেইতো বলেন, “আমরা প্রচলিত প্রকল্পটি পরিবর্তন করিনি। তবে আমরা দুই ধরনের সংহতি ভিসা তৈরি করেছি।”

তিনি বলেন, “নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী আগ্রহী ধনী বিদেশিদের সাশ্রয়ী মূল্যের বাড়িতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা হবে, যাতে পর্তুগিজ নাগরিকেরা সুলভ মূল্যে বাড়ি কিনতে বা ভাড়া নিতে পারেন। এছাড়াও অভিবাসীদের জন্য বাসস্থান তৈরি এবং ইন্টিগ্রেশন প্রকল্পে অর্থায়নের সুযোগ দেওয়া হবে।”

পর্তুগালে বসবাসরত অভিবাসীর সংখ্যা অন্তত আট লাখ। সংখ্যাটি এক দশক আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। দেশটির অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানও রাখছেন এসব অভিবাসী। কিন্তু মাইগ্রেশন অবজারভেটরি বলছে, অভিবাসীদের চাকরির নিশ্চয়তা নেই এবং মজুরিও পাচ্ছেন কম।

অনেকেই দেশটিতে থাকার জন্য বাসা খুঁজে পাচ্ছেন না। এক বাসায় গাদাগাদি করে অনেকে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। কেউ কেউ রাত কাটাচ্ছেন রাস্তায়। বাসা ভাড়া বেড়েছে তীব্রভাবে, বেড়ে গেছে বাড়ির দামও। পর্যটনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত লিসবন ও পোর্তো শহরে এ সংকট আরও তীব্র হয়েছে৷

গোল্ডেন ভিসা পেতে হলে আগ্রহী বিদেশি নাগরিককে বিনিয়োগের ধরনের উপর নির্ভর করে আড়াই থেকে পাঁচ লাখ ইউরো বিনিয়োগ করতে হতো।

লেইতো আমারো বলেন, সরকার নতুন সলিডারিটি ভিসার জন্য বিনিয়োগের পরিমাণ এখনও নির্ধারণ করেনি। তবে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে অন্যান্য পদ্ধতির চেয়ে এক্ষেত্রে বিনিয়োগের পরিমাণ কম ধরা হবে। সূত্র: রয়টার্স, ডয়েচে ভেলে

বিডি প্রতিদিন/একেএ



এই পাতার আরো খবর