ঢাকা, শনিবার, ৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

কনজারভেটিভ ব্রিটেন হঠাৎ ‌লেবারে ঝুঁকলো কেন?
অনলাইন ডেস্ক

কট্টরপন্থী কনজারভেটিভকে চূড়ান্তরূপে হারিয়ে দিয়ে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতা দখল করেছে খানিকটা বামঘেঁষা রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত লেবার পার্টি। এই ঘটনা অনেকটাই অবাক করেছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। কারণ বর্তমানে ফ্রান্সসহ গোটা ইউরোপ জুড়েই ডানপন্থীদের জয়জয়কার।

অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, কট্টরপন্থা ছেড়ে বামজুজু গায়ে মাখা দলের দিকে কেন হঠাৎ ঝুঁকলো ব্রিটিশরা?

তবে বাইরে থেকে এমন মনে হলেও ‘ভূমিধস’ পরাজয়ের পরও রক্ষণশীলরা আসলে খুব একটা পিছিয়ে পড়েনি। তার যোগ্য উদাহরণ নাইজেল ফারাজ। তার জনপ্রিয় ডানপন্থী দল রিফর্ম ইউকে সাম্প্রতিক নির্বাচনে প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে। এর আগের নির্বাচনে দলটির একটিও সংসদীয় আসন না থাকা সত্ত্বেও ফারাজ নিজেই এখন নির্বাচনে একটি আসন সুরক্ষিত করেছেন। ফারাজের সাথে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সুসম্পর্ক ছিল। ব্রেক্সিটের মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাওয়ার পেছনে অনেকটাই কৃতিত্ব তার।

নির্বাচনে শুধু একটি আসনই জেতেননি ফারাজ, দলের সহকর্মীদের সাথে মিলে তিনি লেবার নেতা কিয়ার স্টারমারকেও চ্যালেঞ্জ করতে পারেন, এমনটাই ধারনা করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। যদিও স্টারমারের উল্লেখযোগ্য সংখ্যাগরিষ্ঠতার তুলনায় ফারাজের বিজয় তুলনামূলক নগণ্য। তবে এই কট্টরপন্থী নেতা কনজারভেটিভ পার্টিকেও ভবিষ্যতে আরও ডানপন্থার দিকে টেনে নিয়ে যেতে পারেন।

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ফারাজের উপস্থিতি ব্রিটিশ রাজনীতিতে নিজের অগোচরেই ডানপন্থী ভোটকে বিভক্ত করেছে। আর তার ফলও গেছে স্টারমারের ঘরে। 

লেবার পার্টি যেসব নির্বাচনি এলাকায় জয়ী হয়েছে সেখানে রিফর্ম ইউকে’র শক্তিশালী অবস্থানের অর্থ হলো, পার্লামেন্টে কট্টর-ডানপন্থীদের প্রভাব উপেক্ষা করা কঠিন। সম্ভবত তাদের অবস্থান আরো শক্তিশালী হবে।

যুক্তরাজ্য অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোর মতো একই সংকটে ভুগছে। যদি স্টারমার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন, তাহলে ইউরোপের অন্যত্র জনপ্রিয় ডানপন্থার প্রতিই ব্রিটিশ জনগণ আরো আগ্রহী হয়ে উঠতে পারেন বলেই ধারণা করা যায়।

তবে অনেক বিশ্লেষকের মতে, ব্রেক্সিটের মতো নানা ইস্যুতে কনজারভেটিভদের প্রতি মানুষের ক্ষোভ বাড়ছিল। সেই সাথে ঋষি সুনাকের নেতৃত্বাধীন দলের মধ্যে আন্তঃকলহও ছিল তীব্রতর। বেকারত্ব দূর কর কিংবা জীবনযাপন ব্যয় হাতের মুঠোয় রাখা অথবা সুলভ আবাসন, সব জায়গাতেই প্রতিশ্রুতি রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন সুনাক। তাই সরকার হয়ে পড়েছিলো অনেকটা জনবিচ্ছিন্ন। আর সেই জায়গাতে দাঁড়িয়েই রাজনীতি, রাজনীতিবিদ আর সরকারে আবারও মানুষে কাছে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন স্টারমার। সেই সাথে অভিবাস নীতি নিয়েই তিনি কড়া ভাসন দিয়ে নজর কেড়েছেন। সবমিলিয়ে ত্রাহি দশা থেকে মুক্তি আর পরিবর্তন আকাঙ্ক্ষা থেকেই মানুষ লেবার পার্টিকে ভোট দিয়েছে।

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর