ভারতের উত্তর প্রদেশের হাথরাস জেলায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে কমপক্ষে ১২১ পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার অনুষ্ঠানের প্রধান আয়োজক পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। ওই ব্যক্তির নাম দেবপ্রকাশ মধুকর। পুলিশের নথিভুক্ত একটি প্রাথমিক প্রতিবেদনে মূল সন্দেহভাজন হিসেবে মধুকরের নাম ছিল।
তার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক হত্যা চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়। তাকে গ্রেফতার করতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে ১ লাখ রূপি পুরষ্কার দেওয়া হবে বলে পুলিশ ঘোষণা করেছিল। গত মঙ্গলবার রাজ্যের হাতরাস জেলায় ‘শিব স্মরণে’ ভোলে বাবার এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ভাষণ দিচ্ছিলেন ভোলে বাবা নিজেই। মূলত তার ভাষণ শুনতেই ভক্তরা সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন।
অনুষ্ঠান চলাকালীন পরিবেশ খুব গরম ও আদ্র ছিল। তাবু ঘেরা অনুষ্ঠানে এত বেশি মানুষ এসেছিল যে পরিস্থিতি দমবন্ধের মতো হয়ে গিয়েছিল। দায়েরকৃত এফআইআরের তথ্য অনুসারে, অনুষ্ঠানটিতে ৮০ হাজার লোকের সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল কিন্তু সেখানে প্রায় আড়াই লাখেরও বেশি ভক্ত উপস্থিত হয়েছিলেন।
পুলিশ জানায়, প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে অনুষ্ঠান চলা অবস্থায় শ্বাসরোধ হয়ে সৎসঙ্গে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়। এক পর্যায়ে সবাই হুড়োহুড়ি শুরু করলে পদদলিত হয়ে হতাহত হন বহু পূণ্যার্থী। পুলিশ আরো জানিয়েছে অনুষ্ঠানের সময় আশেপাশের পরিবেশ প্রচণ্ড গরম ও আর্দ্র ছিল।
ধর্ম প্রচারক সাকার বিশ্ব হরি ভোলে বাবার ব্যানারে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এই ধরনের অনুষ্ঠান করে আসছেন। স্বঘোষিত ধর্মগুরু বাবা নারায়ন হরি ওরফে ভোলে বাবার প্রকৃত নাম সুরাজ লাল। তিনি উত্তর প্রদেশের ইতাহের জেলার পাতিয়ালি পঞ্চায়েতের বাহাদুরনগরী গ্রামের বাসিন্দা। সাধারণ কৃষক পরিবার থেকে উঠে আসা সুরাজ একসময় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের গোয়েন্দা শাখার হেড কনস্টেবল ছিলেন।
পরে ১৯৯৯ সালে চাকরি ছেড়ে দিয়ে ধর্মীয় বাণী প্রচারে মন দেন এবং নিজের নাম পরিবর্তন করে নারায়ণ সাকার হরি রাখেন। পুলিশে তিনি প্রায় ১৮ বছর চাকরি করেন। প্রায় ২৭ বছর ধরে এই অঞ্চলে ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে ধর্ম প্রচার করতেন। সূত্র : আল-আরাবিয়া।
বিডি-প্রতিদিন/শআ