ঢাকা, সোমবার, ৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

নতুন শর্তে ফের যুদ্ধবিরতি আলোচনার বুকে ছুরিকাঘাত নেতানিয়াহুর!
অনলাইন ডেস্ক
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু

গাজা উপত্যকায় যু্দ্ধবিরতি নিয়ে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস নমনীয়তা প্রদর্শন করলেও আবারও নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে কার্যত এই আলোচনার বুকে ছুরিকাঘাত করলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

যুদ্ধবিরতি আলোচনায় হঠাৎ নতুন কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেছেন নেতানিয়াহু। সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, তার উত্থাপিত এসব দাবি নিয়ে কোনও আলোচনা হবে না। 

এর ফলে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি এবং পণবন্দী মুক্তি আলোচনা আবারও ভণ্ডুল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। 

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, নেতানিয়াহুর নতুন শর্তের মধ্যে রয়েছে, ইসরায়েল যেকোনও সময় আবারও হামলা শুরু করতে পারবে এমন নিশ্চয়তা।

রবিবার রাতে নেতানিয়াহুর এই শর্তের ফলে ইসরায়েল এবং মধ্যস্থতাকারী- উভয় পক্ষের মধ্যে ক্রোধের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে অভিযোগ করেছেন, এর মাধ্যমে নেতানিয়াহু শান্তি আলোচনাকে ভণ্ডুল করে দিচ্ছেন।

অনেক কাঠখড় পোড়ানোর পর চলতি সপ্তাহে আবার শান্তি আলোচনা শুরু হতে যাচ্ছে। হামাস বেশ নমনীয়তাও প্রদর্শন করে। কিন্তু নেতানিয়াহুর নতুন শর্ত সবকিছু শেষ করে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

নেতানিয়াহুর অফিস থেকে রবিবার রাতে চারটি দাবি উত্থাপন করা হয়। এর প্রথমটি রয়েছে, যেকোনও সম্ভাব্য চুক্তিতে অবশ্যই ইসরায়েলের যুদ্ধের সকল লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আবার যুদ্ধ শুরু করার সুযোগ থাকতে হবে।

দ্বিতীয় দাবি হল, এই নিশ্চয়তা দিতে হবে যে মিশর থেকে গাজায় কোনও অস্ত্রের চোরাচালান হতে পারবে না।

তৃতীয় দাবি, গাজা উপত্যকার উত্তরে সশস্ত্র ‘সন্ত্রাসীদের’ ফেরার অনুমতি দেওয়া যাবে না।

চতুর্থ শর্ত হল, হামাসের বন্দীদশা থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক জীবিত অপহৃতকে মুক্তি দিতে হবে।

নেতানিয়াহুর বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলের এই পরিকল্পনার প্রতি প্রেসিডেন্ট বাইডেন একমত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, হামাস ইতোপূর্বে জানিয়েছিল- যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার সময়ই ইসরায়েলকে নিশ্চয়তা দিতে হবে যে তারা আর যুদ্ধ শুরু করবে না। ইসরায়েল এই শর্তে রাজি হয়নি। হামাস পরে জানায়, কাতার ও মিশর তাদেরকে নিশ্চয়তা দিয়েছে যে, তিন দফার যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম দফার পর দ্বিতীয় দফা বাস্তবায়নের সময় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা হবে। এই সময় ইসরায়েল যুদ্ধ করবে না বলে মিশর ও কাতার মৌখিকভাবে নিশ্চয়তা দিয়েছে। হামাস এটা মেনে নিয়ে বলেছে, তাদেরকে লিখিতভাবে এই নিশ্চয়তা দিতে হবে।

তবে শুক্রবার ওয়ালা নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বার্নিয়া দোহায় কাতারি আলোচকদেরকে জানিয়েছেন- মধ্যস্থতাকারীদের পক্ষ থেকে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেওয়া যাবে না।

এদিকে নেতানিয়াহুর অফিস থেকে নতুন যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছে, তা ইসরায়েলের নিরাপত্তা কর্মকর্তা এবং মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। তারা বলছেন, এসব দাবির মাধ্যমে সম্ভাব্য শান্তিচুক্তির বুকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।

ইসরায়েলের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা পরিচয় প্রকাশ না করে চ্যানেল ১২-এ বলেন, “নেতানিয়াহু ভান করেন যে তিনি চুক্তি চান, কিন্তু কার্যত তিনি শান্তিচুক্তি ভণ্ডুল করতে চান।”

তিনি বলেন, বন্দীদের মুক্তির ব্যাপারে নেতানিয়াহুর কোনও আগ্রহ নেই। তিনি বরং তার অবস্থানকে চরম পর্যায়ে নিতে যেতে চান। সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল

বিডি প্রতিদিন/একেএ



এই পাতার আরো খবর